নীলফামারীতে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ৫ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। শনিবার বিকেলে লালমনিরহাটের দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্ট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীতে চার দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

আজ রোববার সকাল ছয়টার দিকে লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে সকাল নয়টায় পানি কমে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে রাত ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এই পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের ভাষ্য, তিস্তার পানি বাড়ার কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৫টি চর গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গতকাল তিস্তা নদীর পানি বাড়ে। যা আজ রোববার সকাল নয়টা পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এতে তাঁর ইউনিয়নের পূবছাতনাই ও ঝাড়সিংহেরস্বর মৌজার প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়েছে পড়েছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় লোকজন আতঙ্কে আছেন।

খালিশাচাপানী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রবিউল ইসলাম বলেন, দুই দিন ধরে তিস্তায় পানি বাড়ছে। আজ সকাল পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তিস্তাপারে বসবাসরত পরিবারগুলো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। পূর্ব ও পশ্চিম বাইশপুকুর গ্রামে দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।

আরও পড়ুন

তিস্তার চর বেষ্টিত ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার কারণে ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আজ সকাল ছয়টায় ৫২ দশমিক ১৭ মিটার এবং সকাল নয়টায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭ মিলিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, আজ সকাল ছয়টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল নয়টায় ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পূর্বাভাস অনুযায়ী পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।