গোসাইরহাট পৌরসভা ভবনে বিক্ষুব্ধ লোকজনের হামলা, মেয়র লাঞ্ছিত
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট পৌরসভা ভবনে হামলা করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ সোমবার সকালে দুই শতাধিক মানুষ মিছিল নিয়ে এই হামলা চালান। এ সময় তাঁরা সদ্য অপসারণ হওয়া পৌরসভার মেয়র আবদুল আউয়ালকে লাঞ্ছিত করেন। সেই সঙ্গে পৌর ভবনের কয়েকটি জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার কারণে মেয়রের শাস্তি দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
গোসাইরহাট পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধীপুর এলাকায় দুই শতাধিক মানুষ এসে গোসাইরহাট পৌরসভা ভবনে হামলা চালান। বিক্ষোভকারীরা পৌরসভার মেয়রকে কক্ষ থেকে বের করে লাঞ্ছিত করেন। তাঁরা ভবনের নিচতলার বিভিন্ন কক্ষের কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। এ সময় সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। বিএনপি নেতাদের সহায়তায় পৌর মেয়র আবদুল আউয়াল পৌর ভবন থেকে চলে যান। বিক্ষোভকারীরা চলে যাওয়ার পর সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্যদের নিয়ে পৌর ভবনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মেদ সাব্বির সাজ্জাদ।
পৌরসভার সচিব আবদুল আলীম মোল্যা প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল আউয়াল মেয়র নির্বাচিত হন। আজ সকালে কয়েক শ মানুষ বিক্ষোভ করে পৌর ভবনে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালান। তাঁরা মেয়রকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। কক্ষ থেকে বের হলে তাঁকে ধাওয়া করা হয়। তখন তাঁরা ভয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর কী হয়েছে, তা বলতে পারেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিক্ষোভকারী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় পৌরসভার মেয়র বিভিন্নভাবে আন্দোলনকারীদের হেনস্তা করেছেন, ভয় দেখিয়েছেন। এ জন্য আন্দোলনকারীরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁর শাস্তির দাবেতে তাঁরা আজ একত্রে হয়েছিলেন।
এদিকে আজ সোমবার আদেশ জারি করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি দেশের ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সব পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
সদ্য অপসারণ হওয়া মেয়র আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো ছাত্র-জনতা আমার ওপর ও পৌর ভবনে হামলা চালাননি। যাঁরা হামলা চালিয়েছেন, তাঁরা আমার রাজনৈতিক ও নির্বাচনী প্রতিপক্ষ এক বিএনপি নেতার আত্মীয়স্বজন। এ ঘটনায় পৌরসভার ৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের হামলার মুখে আমি পৌর ভবন ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সাহায্য পাইনি।’
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মেদ সাব্বির সাজ্জাদ প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের অপসারণের আদেশ নিয়ে আজ অফিসে ব্যস্ত ছিলেন। তখন পৌর ভবনে বিশৃঙ্খলার খবর পান। পরে সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা আসার পর পৌর ভবনে যান। ততক্ষণে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে চলে যান। ওখানে কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।