দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে গৃহবধূর গায়ে অ্যাসিড ছোড়েন জাহিদ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় সুজাতপুর গ্রামে এক অন্তঃসত্ত্বার ওপর অ্যাসিড ছোড়ার মামলায় গ্রেপ্তার মো. জাহিদ (২০) গতকাল রোববার বিকেলে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি আদালতের কাছে বলেন, মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামের নির্দেশে তিনি এ কাজ করেন। এর বিনিময়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা পান।
আদালতের বরাত দিয়ে গতকাল রাতে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মতলব উত্তর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান ওই আসামির জবানবন্দির বিষয়ে এ তথ্য দেন। গতকাল বিকেলে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তন্ময় কুমার দের আদালতে জাহিদ এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।
গত শনিবার নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারি দোকান থেকে পুলিশ জাহিদকে আটক করে। পরে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। জাহিদের বাড়ি সুজাতপুর গ্রামে।
জাহিদের দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলাম ওরফে মানিকের নির্দেশে জাহিদ এ কাজ করেন। জাহিদ এ জন্য শফিকুলের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকাও নেন। জাহিদের জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জাহিদসহ এ পর্যন্ত মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। অপর আসামি মো. বাদল বিদেশে রয়েছেন। দেশে এলে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বসতঘরের দরজা দিয়ে মিলি ও তাঁর মা রাশেদা বেগমের ওপর দুর্বৃত্তরা অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়। অ্যাসিডে মিলির মুখ, বুক, পিঠ, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তাঁর মা রাশেদা বেগমের ডান হাত, বুক ও ঊরুও ঝলসে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাঁদের সেখান থেকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
এ ঘটনার পরদিন মিলির বাবা বাদী হয়ে জাহিদ, শফিকুল ইসলামসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং স্থানীয় বন্ধুসভার কর্মীদের সহযোগিতায় উপজেলার সুজাতপুর বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।