সিলেটে বিএনপির বিরুদ্ধে সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ
বিএনপির রোডমার্চ ও সমাবেশে যোগ দিতে আসা কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে নগরের কিনব্রিজ এলাকার সারদা হলে এ ঘটনা ঘটে বলে সংস্কৃতিকর্মীরা জানান।
হামলায় অন্তত ১০ জন সংস্কৃতিকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে নাট্য সংগঠক বিভাষ শ্যাম পুরকায়স্থ যাদন, আবদুল কাইয়ুম, হুমায়ুন কবির ও নাহিদ পারভেজ আছেন। খবর পেয়ে সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নাট্যকর্মীরা নগরে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
সংস্কৃতিকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটের ৮৭ বছরের ঐতিহ্যবাহী সারদা হল দীর্ঘ ১১ বছর ধরে অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সংস্কারের পর আজ সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের কথা ছিল। এ উপলক্ষে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সেখানে নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। এ জন্য সংস্কৃতিকর্মীরা বিকেল থেকে সেখানে মহড়া দেন।
বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বিএনপির একদল নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়েন। এ সময় তাঁরা নারী সংস্কৃতিকর্মীসহ উপস্থিত নাট্যকর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এতে বাধা দিলে কয়েকজন নেতা-কর্মী দলবদ্ধ হয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হামলা চালান। পরে সংস্কৃতিকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের হামলা সিলেটের সম্প্রীতির ইতিহাসে ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে। রোডমার্চ ও সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির একদল নেতা-কর্মী কোনো কারণ ছাড়াই এ হামলা চালিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
হামলার খবর পেয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। সিটি করপোরেশন সারদা হল দেখভাল করে। আরিফুল এ সময় দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কে বা কারা হামলা চালিয়েছে জানি না। তবে বিষয়টি অবশ্যই দুঃখজনক। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত এবং অনুষ্ঠানস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন আছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।