এবার বিশেষজ্ঞ সদস্য ছাড়াই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হলো শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি

বিশেষজ্ঞ সদস্য ছাড়াই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার উপাচার্য শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে এ পরীক্ষা হয়। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা সমালোচনা।

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডের সদস্য রয়েছেন চারজন। উপাচার্য শিরীণ আখতার পদাধিকার বলে এ বোর্ডের সভাপতি। পাশাপাশি বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিমও পদাধিকার বলে বোর্ডের সদস্য। এর বাইরে বিভাগের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কুন্তল বড়ুয়া ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ এই বোর্ডের সিন্ডিকেট মনোনীত বিশেষজ্ঞ সদস্য।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়,আজ বেলা ১১টায় উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। এতে বিশেষজ্ঞ দুই সদস্যের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এরপরও উপাচার্য তিনটি পদের বিপরীতে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন। এতে ৬৮ প্রার্থী আবেদন করলেও ৪০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে আজ সকালেই উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়েছিলেন কুন্তল বড়ুয়া। এতে তিনি নাট্যকলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে প্রার্থীদের সাক্ষাতে ডাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান পরিস্থিতির কারণে নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

জানতে চাইলে কুন্তল বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, দুটি কারণে তিনি পরীক্ষার বোর্ডে অংশ নেননি। এর প্রথমটি হলো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নাট্যকলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত মানেনি। কমিটি যেসব প্রার্থীকে যাচাই–বাছাই করে সাক্ষাৎকারে ডাকার জন্য সুপারিশ করেছিল, প্রশাসন তাঁদের সাক্ষাৎকারে ডাকেনি। প্রশাসন এটি কোনোভাবেই করতে পারে না।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে কুন্তল বড়ুয়া বলেন, কিছুদিন ধরে বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মতো নাট্যকলা বিভাগেও অস্বচ্ছতার কথা তিনি শুনেছেন। যে কারণে তিনি মনে করেন, এ প্রশাসনের আমলে নিয়োগ স্বচ্ছ হবে না। এসব কারণ বিবেচনা করে তিনি বোর্ডে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। একই কারণে আরেক বিশেষজ্ঞ সদস্য বিরত থাকতে পারেন বলে তিনি ধারণা করছেন।

পরে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চেয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদকে মুঠোফোনে কল করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জানতে চেয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের মুঠোফোন কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বোর্ডের এক সদস্য এত দিন তাঁদের কিছু জানাননি। হঠাৎ আজ সকাল ১০টায় চিঠি দিয়ে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। আবার আরেক সদস্যকে ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। যদি আগেভাগে জানিয়ে দেওয়া হতো, তাহলে তাঁরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেন।

রেজিস্ট্রার বলেন, যতক্ষণে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, ততক্ষণে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অনেক প্রার্থী চলে এসেছেন। যেহেতু দুই সদস্য অনুপস্থিত থাকার পরও কোরাম পূর্ণ হয়েছে, তাই উপাচার্য সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।