কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিতে আবারও পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে পদবঞ্চিতরা। আজ রোববার সকালেছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিতে আবারও মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শহরের এনএস রোডে প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে নেতা-কর্মীরা মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে একই দাবিতে ৬ নভেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ করে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন নেতা-কর্মীরা। আজকের সমাবেশে নেতারা বলেন, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে আন্দোলন তীব্র করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে শহরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জড়ো হন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। কিছুক্ষণ পর আরও অনেক নেতা-কর্মী এনএস রোডে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন। তাঁরা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বড় বাজার এলাকায় গিয়ে আবারও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সমবেত হন।

বেলা ১১টার দিকে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার, আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম উল হাসান প্রমুখ।

আরও পড়ুন

কাজল মাজমাদার বলেন, ‘এই পকেট কমিটি অবশ্যই বাতিল করতে হবে। এই কমিটিতে বিতর্কিত, উড়ে এসে জুড়ে বসা পাখিদের রাখা হয়েছে। কমিটি বাতিল ছাড়া এই শহরে তাদের নেতৃত্ব বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী মানবে না। আন্দোলন তীব্র থেকে আরও তীব্র করা হবে।’

জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের উদ্দেশে শামীম উল হাসান বলেন, ‘ত্যাগী ও নির্যাতনের শিকার নেতাদের নিয়ে রাজনীতি করুন। এই পকেট কমিটি বাতিল করেই ছাড়ব ইনশা আল্লাহ। রাজপথে আন্দোলন চলবে। আগামী দু–এক দিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

শামীম উল হাসান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘প্রয়োজন হলে সার্চ কমিটি গঠন করেন। পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন।’

পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘তারা যা করছে, তা ঠিক করছে না। সম্পূর্ণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যন্ত কমিটি গঠন করা হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই যারা ত্যাগী বা দলের জন্য নিবেদিত, তারা বের হয়ে আসবে। তাদের উচিত দলের গঠনতন্ত্র মেনে দল করা। দলকে সহযোগিতা করা।’

গত ২৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকারকে সদস্যসচিব করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এরপর ৪ নভেম্বর ৩১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, কমিটিতে যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁদের অনেকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন ও অত্যাচারের সময় মাঠে ছিলেন না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়। ২০১৯ সালের ৮ মে সৈয়দ মেহেদী আহমেদকে সভাপতি ও সোহরাব উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখে জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এর আগে ২০১২ সালে গঠিত কমিটিতে এই দুজন একই পদে ছিলেন।