ডাকাতি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যসহ ১৩ জন কারাগারে
ডাকাতি মামলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সদস্য নুরুল ইসলামসহ ১৩ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমলি আদালতের (সদর) বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর এ আদেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, গোবরাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণচরি গ্রামের জসিম উদ্দিনের সঙ্গে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল বিয়ে হয় মুনসেফপুর গ্রামের মোসলেমা খাতুনের সঙ্গে। বনিবনা না হওয়ায় এক বছর পর ২০২২ সালের ৩১ মে তাঁকে তালাক দেন জসিম উদ্দিন। তালাকের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সালিসের আয়োজন করেন। এ সময় জসিমকে ২ লাখ ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। তাঁকে অতিরিক্ত জরিমানা করা হয়েছে—এ অভিযোগ করে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান জসিম উদ্দিন ও তাঁর বাবা শাহ জামাল। তখন তাঁদের দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
জসিম উদ্দিনের অভিযোগ, ওই ঘটনার জের ধরে গত ২৭ জুলাই ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের নির্দেশে দুর্বৃত্তরা তাঁদের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাড়ির উঠান থেকে দুটি গরু নিয়ে যায়। এ ছাড়া এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪৩ হাজার টাকা লুট করা হয়।
পরে শাহ জামাল ২০২২ সালের ৩১ জুলাই আমলি আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী। নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে বাদীসহ তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বাদীর আইনজীবী নুরে আলম আরও জানান, পরোয়ানা জারির পর চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামসহ অন্যরা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন। সেই সঙ্গে উচ্চ আদালত ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেওয়ার আদেশ দেন। ১৪ অক্টোবর তাঁদের উচ্চ আদালতে থেকে পাওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের সাত দিন পরে রোববার আমলি আদলতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তখন আদালতের বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।