বগুড়ায় বরখাস্ত ফায়ারম্যানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্ত্রী দাবি করা নারীর অভিযোগ হত্যা

আবদুল মোমিন
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ফায়ারম্যান আবদুল মোমিনের (২৮) গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে মোকামতলা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের নিজ বাড়ির শোবার ঘর থেকে ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আবদুল মোমিন হরিপুর গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর ফায়ার স্টেশনে ফায়ারম্যান পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় এক বছর আগে বরখাস্ত হন। এর পর থেকে বড় ভাই মহিউদ্দিন মিজানের বাসায় থাকতেন মোমিন। মহিউদ্দিন মিজান জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক।

নিজেকে আবদুল মোমিনের স্ত্রী দাবি করে শাহানা বেগম নামের এক নারী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মোমিনকে তাঁর বড় ভাই মহিউদ্দিন মিজান শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করবেন তিনি।

তবে মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছোট ভাই মোমিন মাদকাসক্ত ছিলেন। এ কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ নারীকে বিয়ে করেছেন তিনি। তাঁকে সুস্থ করতে মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। শাহানা বেগম নামের যে নারী নিজেকে তাঁর স্ত্রী দাবি করছেন, তাঁর সঙ্গে মোমিনের অনেক আগে ডিভোর্স হয়েছে। মাদকাসক্ত হওয়ায় ও বহুবিবাহের কারণে বিষাদগ্রস্ত ছিলেন মোমিন। হতাশা থেকেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।’

মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) আশিক ইকবাল বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

শাহানা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আবদুল মোমিন ঠাকুরগাঁও ফায়ার স্টেশনে কর্মরত থাকার সময় তাঁর ভাই মহিউদ্দিন মিজানের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন। মহিউদ্দিন মিজান বাবার সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন। এর প্রতিবাদ করলে আবদুল মোমিনকে মাদকসেবী অপবাদ দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁকে জোর করে বিভিন্ন মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রেও রাখা হয়। একপর্যায়ে মহিউদ্দিন মিজান তাঁকে জয়পুরহাটের বাসায় আটকে রেখে নানা ধরনের ইনজেকশন পুশ করেন। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করা হলে চার দিন আগে মহিউদ্দিন মিজানের বাসায় অভিযান চালিয়ে আবদুল মোমিনকে উদ্ধার করে তারা। পরে আবারও পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় দেওয়া হয় আবদুল মোমিনকে।