বোরহানউদ্দিনে ‘ইলিশ রান্না না করায়’ মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ‘ইলিশ মাছ রান্না না করায়’ এক নারীকে তাঁর ছেলে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই নারীকে রক্ষা করতে প্রতিবেশী আরেক নারী এগিয়ে এলে তাঁকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর উপজেলার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ওই যুবকের নাম রাহাত হোসেন (৩০)। মাকে কুপিয়ে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি। রাহাত জয়া গ্রামের দুলাল হাওলাদারের ছেলে। নিহত নারীর নাম নাছিমা বেগম (৫০)। তাঁকে কোপানোর সময় আহত হন পাশের বাড়ির নাজু মৃধার স্ত্রী জাহানারা বেগম।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাহাত হোসেনের স্ত্রী ও বাবা ঢাকায় আছেন। সেখানে কথায় কথায় মানুষজনকে দা-বঁটি নিয়ে তাড়া করতেন তিনি। তাই ওঝা-কবিরাজ দেখানোর জন্য গতকাল তাঁকে ভোলায় আনা হয়। ঢাকা থেকে আসার পথে তিনি চিংড়ি ও ইলিশ মাছ কিনে আনেন। গতকাল সন্ধ্যার পর সেই ইলিশ রান্না করার জন্য মাকে বলেন তিনি। মা জানান, এখন তিনি মাছ রান্না করতে পারবেন না। এরপরও রাহাত তাঁর মাকে ইলিশ মাছ রান্না নিয়ে বিরক্ত করতে থাকেন। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে রাহাত দা দিয়ে তাঁর মাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় মায়ের চিৎকার শুনে প্রতিবেশী জাহানারা বাধা দিতে এলে তাঁকেও কুপিয়ে আহত করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার পর রাহাত লাশের পাশে বসেছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে আটক করা হয়। আহত জাহানারাকে বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রাহাত হোসেন পুলিশকে জানিয়েছেন যে ছোটবেলা থেকে তিনি ঢাকায় কাজ করে সংসারের হাল ধরেন। ঢাকায় ব্যবসা করেন। কিন্তু মা-বাবা তাঁকে না জানিয়ে সব জমি বিক্রি করে সেই টাকা তাঁর বোন শিউলী বেগমকে দিয়ে দেয়। তাঁকে ও তাঁর ছোট ভাইকে বঞ্চিত করেছে। এ নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। সেই থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাহাতকে আটকের পাশাপাশি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।