সাক্ষীরা না আসায় মধুপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের আলোচিত মামলার বিচার থেমে আছে

টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় দুই বছর আগে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত ঘটনায় হওয়া মামলার সাক্ষীরা আদালতে আসছেন না। এ জন্য বিচারকাজ থমকে আছে।

চলতি বছরের ২৩ জুন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগ গঠনের পর গত ১৬ জুলাই থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য চারটি তারিখ চলে গেছে। কিন্তু মামলার বাদী, ভুক্তভোগী বা অন্য কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। আগামী ৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ রয়েছে।

আদালত সূত্র আরও জানায়, পুলিশের মাধ্যমে ভুক্তভোগী ও বাদীর কাছে সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ভুক্তভোগীকে খুঁজে পায়নি। বাদী সমন পেলেও আদালতে আসছেন না।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ৩ আগস্ট কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাসটি মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। ওই ঘটনায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন ২০২৩ সালের ৩১ মে আদালতে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাঁরা হলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গোরস্তানপাড়া গ্রামের রাজা মিয়া (৩৩), কুড়িগ্রামের ধনারচর পশ্চিমপাড়ার নূরুনবী হোসেন (২৫), খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার আবদুল মান্নান (২১), মধুপুরের ধলপুর গ্রামের মাহমুদুল হাসান ওরফে মুন্না ওরফে রতন (২৩), গাজীপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার ছোট কাঞ্চনপুর গ্রামের আবদুল আওয়াল (৩২), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার দশসিকা গ্রামের রাসেল তালুকদার (৩১) ও আসলাম তালুকদার (২৩), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কাইতলা গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (২৫) ও ঢাকার সভার উপজেলার গোহাইলবাড়ি দক্ষিণপাড়ার জুলহাস বাবু (২৭)। অপর দুই আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচারকাজ চলছে শিশু আদালতে।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সদ্য বিদায়ী বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহম্মদ বলেন, অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য একাধিক তারিখ গেছে। কিন্তু বাদী বা অন্য কোনো সাক্ষী আদালতে আসেননি। তাই সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া উচিত।