ধর্মঘটে কুড়িগ্রাম মোটর মালিক সমিতির ‘সম্মতি’ নেই, তবুও বন্ধ যান চলাচল
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে আজ শুক্রবার সকাল থেকে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর জেলা বাস মালিক সমিতি। তবে এ ধর্মঘটে সম্মতি নেই বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান।
আজ শুক্রবার সকালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো ধর্মঘট আহ্বান করিনি। আমাদের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে কোনো নির্দেশনাও নেই। তবে রংপুরের ডাকা ধর্মঘটে আমাদের জেলার মোটরযান মালিকেরা গাড়ি চালাবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত তাঁদের।’ তিনি বলেন, ‘যাঁরা গাড়ি চালাতে চাইবেন, তাঁরা চাইলে গাড়ি চালাতে পারবেন। আমাদের দিক থেকে কোনো বাধা নেই। তবে সে ক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বাস মালিক কর্তৃপক্ষ নেবেন।’
ধর্মঘটের কারণ হিসেবে মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ কয়েকটি দাবির কথা উল্লেখ করেছে রংপুরের বাস মালিকদের সংগঠনটি। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, গণসমাবেশ বানচাল করতেই এই ‘অপকৌশল’ নেওয়া হয়েছে। রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আগামীকাল হওয়ার কথা।
কুড়িগ্রামে মোটরযান মালিকেরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধর্মঘটের ডাক না দিলেও আজ সকাল থেকে জেলায় অটোরিকশা ও রিকশা ব্যতীত কোনো যানবাহন চলছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।
কুড়িগ্রামের মোটরমালিকদের সংগঠনের নেতা লুৎফর রহমানের দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে অনেক অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট বসলে সেসব অবৈধ যানবাহনকে জরিমানা করা হয় না। অথচ সেসব যান তাঁদের সামনে দিয়েই চলাচল করে।
জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ পনির উদ্দিন জেলা মোটরমালিক সমিতির সভাপতি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম মোটর মালিক সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রংপুরে ডাকা ধর্মঘটে আমাদের কোনো সমর্থন নেই। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে রংপুরে গাড়ি পাঠালে সেগুলো তারা আটকে দিচ্ছে। রংপুরে আমাদের ৯টি গাড়ি আটকানো ছিল। পরে রাতে সেগুলো ছেড়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা গাড়ি চালাব না।’
প্রশাসনিক হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিআরটিএ চাহিদা দিলে শুধু মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। প্রসিকিউশনের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগভাবে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয়। আমরা যাত্রীদের কথা বিবেচনায় আইনের মধ্যে থেকে কাজ করি।’