মানিকগঞ্জে দুকুলই হারালেন বিএনপির বহিষ্কৃত ৪ নেতা
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের চার নেতা অংশ নেন। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তাঁদের চারজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নির্বাচনেও তাঁরা পরাজিত হন।
দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, একে তো দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে পদ হারালেন তাঁরা; এখন নির্বাচনেও হেরে গেলেন। দুই কুলই হারালেন তাঁরা।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও বর্জন করেছে বিএনপি। প্রথম দফার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হরিরামপুর উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাহিদুর রহমান (তুষার) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির সদস্য মোশারফ হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় গত ২৩ এপ্রিল দল থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া সিঙ্গাইর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সিঙ্গাইর উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি আফরোজ রহমান (লিপি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তাঁদেরও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্র জানায়, বুধবার এই দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩১ হাজার ৮৪৮ ভোট জয়ী হয়েছেন। আর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা জাহিদুর রহমান পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০৪ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ হাজার ১০৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. বিল্লাল হোসেন। আর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ১৫ হাজার ১৬৫ ভোট।
সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন ৪৫ হাজার ৭৫৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। আর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা তোফাজ্জল হোসেন পেয়েছেন ১৬ হাজার ২১৩ ভোট। এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা খাতুন ৬৯ হাজার ৬৮১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর উপজেলা মহিলা দল থেকে বহিষ্কৃত আফরোজা রহমান পেয়েছেন ২২ হাজার ৮২৮ ভোট।
নির্বাচনের ফলাফলের বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার সকালে হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী (যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা) জাহিদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, তিনি ১৯ বছর স্থানীয় বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছিলেন। সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ভোটারদের চাপেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে বিএনপি নেতা প্রার্থীদের সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই অংশ নেন। তবে দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর প্রার্থীদের কাছ থেকে সরে যান দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রচার-প্রচারণায় আর অংশ নেননি। এ কারণে নির্বাচনের ভোটের মাঠে বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীরা সুবিধা করতে পারেননি।
এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান বলেন, দলের নির্দেশনা অমান্য করা বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। এ কারণে দল থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাঁদের সঙ্গে দলের কেউ ছিলেন না।