টাঙ্গাইলে ট্রেনে আগুন, নাশকতা বলে মনে করছেন পুলিশ ও রেল কর্মকর্তারা
টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে নাশকতা বলে মনে করছেন পুলিশ ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা। চলমান অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার যে ঘটনা ঘটছে, তার অংশ হিসেবেই টাঙ্গাইলে ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
টাঙ্গাইলের রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার তরিকুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল স্টেশনে আসে। পরদিন সকাল সাতটায় এটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। রাত ৩টার দিকে আন্তনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি টাঙ্গাইল স্টেশনে প্রবেশ করে। এ সময় টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি আড়ালে পড়ে যায়। একপর্যায়ে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা প্রথমে পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে আগুন ও ধোঁয়া দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। পরে স্টেশনে কর্মরত রেলওয়ের কর্মী, রেল পুলিশ, আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সকালে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার, বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক শাহ্ সুফি নুর মোহাম্মদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ট্রেনটি পরিদর্শন করেন।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেননি পরির্শন শেষে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে এটি একটি নাশকতার ঘটনা। কারা ঘটিয়েছে, সেটা আরও তদন্তের বিষয়। ঘটনা ঘটেছে এ ব্যাপারে রেলওয়ে থানায় মামলা হবে। তারা মামলাটি তদন্ত করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েক দফায় অবরোধ চলছে। সারা দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। গতকালও অবরোধ ছিল। তার অংশ হিসেবেও এটি হয়ে থাকতে পারে।
রেলওয়ে পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক শাহ্ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটা নাশকতার ঘটনা। ঘটনার তদন্তের জন্য রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট ও যান্ত্রিক প্রকৌশলী।
স্টেশনমাস্টার তরিকুল ইসলাম জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ট্রেনের দুটি বগি পুড়ে গেছে। একটি বগি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সকালে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। তবে অন্যান্য ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দুটো বগির ভেতরে আসন, ফ্যানসহ সব পুড়ে গেছে। একটি বগিতে আগুন লাগলেও ভেতরে পোড়েনি।
ঘটনার পর স্টেশনে টহলব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, আনসার টহল দিচ্ছে।