ত্বকী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ‘জামাই মামুন’ সাত দিনের রিমান্ডে
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আবদুল্লাহ্ আল মামুন ওরফে জামাই মামুনের (৪০) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম নুসরাত সাহারার আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ত্বকী হত্যা মামলার অন্য আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কে কে জড়িত আছেন, অস্ত্র উদ্ধারসহ অন্যান্য বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি আবদুল্লাহ্ আল মামুনের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আবদুল্লাহ্ আল মামুন বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকার আবদুল রহিমের ছেলে। তিনি আজমেরী ওসমানের আত্মীয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় খাগড়াছড়িগামী একটি বাস থেকে আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাবলিগ জামাতের ছদ্মবেশে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির রামগড় যাওয়ার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত আজ শুনানির দিন ধার্য করে কারাগারে পাঠান।
আজ রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেন বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জিয়াউল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান ও জাহিদুল হক। আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ত্বকীকে অপহরণের পর কোথায় নিয়ে রাখা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কে জড়িত, এসব বিষয়ে জানতে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আদালত শুনানি শেষে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত ২৮ দিনে ত্বকী হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব-১১ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদসহ ছয় ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে আজমেরী ওসমানের সহযোগী কাজল হাওলাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাঁদের টর্চার সেলে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেন। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সেই অভিযোগপত্র আজও দেওয়া হয়নি।