নেত্রকোনায় ৫ মামলায় আওয়ামী লীগের ৩৪৫ নেতা-কর্মী আসামি
নেত্রকোনার মদন, বারহাট্টা, দুর্গাপুর ও সদর মডেল থানায় আওয়ামী লীগের ৩৪৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করে ৫টি মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব মামলা হয়।
তিনটি মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুর রহমান ওরফে ভিপি লিটনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আর একটি মামলায় নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ ওরফে রুহীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীরা মদন সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে উচিতপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজু মিয়া বাদী হয়ে মদন থানায় মামলা করে। মামলায় মদন পৌর মেয়র মো. সাইফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান তালুকদারসহ ৪৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৩৫ জনকে।
৪ আগস্ট বারহাট্টা ডেমুরা রেলক্রসিং এলাকায় ছাত্রজনতার ওপর হামলার অভিযোগ এনে বারহাট্টা থানায় একটি মামলা করেন প্রেমনগর গ্রামের আমিনুল ইসলাম। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৬০ জনকে। একই দিন উপজেলা সদরের মাইল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে বারহাট্টা থানায় মামলা করেন পাড়া গরমা এলাকার বাসিন্দা আশিক মিয়া। শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৪০ জনকে।
গতকাল সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মডেল থানায় শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৩৮ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে আরেকটি মামলা হয়। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৬০ জনকে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত বছরের নভেম্বরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কর্মসূচিতে হাজির হয়ে মাইক্রোবাস পোড়ানোসহ নাশকতার সৃষ্টি করেন।
গতকাল দুর্গাপুর থানায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করেন দুর্গাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার এক ব্যক্তি। এতে দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আবদুস ছালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান ও সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের এসব নেতা আত্মগোপনে আছেন।
পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চারটি থানায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।