বিএনপির মিছিলে মিজানুর রহমান নামের এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের ১২৮ জন নেতা-কর্মীর নামে হত্যা মামলা হয়েছে। মিজানুর হত্যার ১১ বছর পর গতকাল শনিবার তার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার ১২৮ জন আসামির মধ্যে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল করিম, পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক, বিএমচরের ইউপি চেয়ারম্যান এস এস জাহাঙ্গীর আলম, চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামের নাম রয়েছে। মামলায় আরও ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহার ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বেলা তিনটার দিকে চকরিয়া পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে বিএনপি। মিছিলে যোগ দিতে উপজেলার কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা পৌর শহরের দিকে রওনা দেন। কাকারা ইউনিয়নের পুলেরছড়া এলাকায় মিছিলের ওপর মুহুর্মুহু গুলি ছুড়তে থাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মামলার প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের হাতে থাকা রাইফেল থেকে ছোড়া গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মিজানুর রহমান। পরে তার মৃত্যু হয়। এ সময় আরও আটজন নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। মিছিলে থাকা লোকজন প্রাণে বাঁচতে চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হকের বাড়িতে ঢুকে গেলে আসামি নজরুল ইসলাম বাড়ির দারোয়ান সোনা মিয়াকে গুলি করেন। গুলিতে তাঁকে পা হারাতে হয়।
মামলার বাদী শাহ আলম বলেন, ‘মিজানুরকে হত্যার ঘটনায় সে সময় থানায় এজাহার দিলে পুলিশ এজাহারটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ ছাড়া আসামিরা তৎকালীন সরকারের প্রভাব দেখিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারও প্রাণনাশের হুমকি দেন। তাই তখন বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হইনি।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ২০১৩ সালে মিজানুর রহমান নামের এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। সেটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। তবে এই মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।