বিএনপির সিলেটমুখী রোডমার্চ বৃহস্পতিবার, ৫ জেলায় ৫টি সমাবেশ
বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট পথে রোডমার্চ করবে বিএনপি। এই রোডমার্চ পাঁচটি জেলাকে ছুঁয়ে যাবে। তাই প্রতিটি জেলায় ওই দিন একটি করে সমাবেশও করবে দলটি। এই লক্ষ্যে এরই মধ্যে দলটি সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে।
বিএনপি জানিয়েছে, রোডমার্চ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সকাল ১০টায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহর থেকে রোডমার্চ শুরু হবে। এর আগে পৌর শহরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হবে। রোডমার্চে বাস, মিনিবাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ নানা যানবাহন থাকবে। প্রতিটি যানবাহনেই বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা থাকবেন।
রোডমার্চ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড মোড়ে, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের শেরপুরে সমাবেশ হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ সমাবেশ হবে সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে। জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশ শুরু হবে বিকেল ৪টায়। এতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটাতে চেষ্টা করছে দলটি।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, রোডমার্চ ও সমাবেশ সফল করতে সিলেটে বিএনপির ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতিমূলক বৈঠক, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ প্রচারণামূলক নানা কর্মসূচি পালন করছেন।
স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে গত সোমবার লিখিত আবেদন করেছে বিএনপি। তবে পুলিশ এখনো এ বিষয়ে বিএনপিকে ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’ কিছুই জানায়নি। এ ছাড়া সিলেটে সমাবেশ সফলে ও পর্যাপ্ত লোকসমাগম নিশ্চিত করতে বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো প্রস্তুতি বৈঠকসহ নানা কর্মসূচি করছে। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার নগর ও উপজেলাগুলোয় দিনভর লিফলেট বিতরণ, খণ্ড বৈঠক ও মাইকিং করা হবে।
এদিকে সমাবেশ সফল করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা বিএনপির নেতারা অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে প্রস্তুতি বৈঠক করেন। এই বৈঠক থেকে দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোডমার্চ ও সমাবেশ আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি আমরা সমাবেশে নিশ্চিত করতে চাই। আজ থেকে সমাবেশস্থলে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
সমাবেশ সামনে রেখে পুলিশ কোনো বাধা সৃষ্টি করছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। সরকারের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। তবে রোডমার্চ সমানে রেখে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো বাধা দেয়নি।
এদিকে বিএনপির নেতারা বলেছেন, গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১২ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি শেষ হবে আগামী ৩ অক্টোবর। এই সময়ের মধ্যে দলটি রোডমার্চ, সমাবেশ, দোয়া মাহফিল, পেশাজীবী ও শ্রমজীবী কনভেনশন, জনসমাবেশ, মহিলা সমাবেশ, কৃষক সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে।