‌সিলেটে নদ-নদীর পা‌নি কমে বন‌্যা প‌রি‌স্থি‌তির উন্ন‌তি, ভোগা‌ন্তি কমেনি

সিলেটে নতুন করে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এখনো নিচু এলাকাগুলোর সড়ক ও বাসাবাড়ি থেকে পুরোপুরি পানি নামেনি। আজ সকালে নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকা থেকে তোলাছবি: আনিস মাহমুদ

‌সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় নদ–নদীর পানি কমে সার্বিক বন‌্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে জেলার প্রধান দু‌টি নদীর চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। লোকালয় থেকে পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বসতবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে বাসিন্দারা।

বন‌্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যার্ত মানুষের ভোগান্তি কমেনি। টানা কয়েক দিন পা‌নিব‌ন্দী থাকায় ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় কাদা–ময়লা জমেছে। এগুলো প‌রিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পা‌নি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার, কু‌শিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পা‌নি ‌বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে গতকাল শুক্রবার জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, নগরের ১৩টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩টি উপজেলার ২৫ হাজার ২৭৫ জন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। জেলায় ৭১৬‌টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬৬‌টিতে বন্যাদুর্গতরা অবস্থান করছে। এ ছাড়া নগর ও জেলায় বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ ৭৮ হাজার।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ. মো. সজীব হোসাইন জা‌নান, গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

সিলেট নগরের একাধিক পা‌নিবন্দী বাসিন্দা বলেন, পানি কমতে শুরু করলেও এখনো অনেক বাড়িঘরে পানি আছে। মূল সড়ক থেকে পা‌নি নামলেও পাড়া–মহল্লার গ‌লিতে পা‌নি দেখা গেছে।

সিলেট নগরের মণিপুরি রাজবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শুভা‌শিষ দেব বলেন, পা‌নি বেড়ে যাওয়ায় ঈদের দিন নিজেদের বসতভিটা ছেড়ে এক স্বজনের বাড়িতে উঠেছিলেন তাঁরা। গতকাল ঘর থেকে পানি নামলেও পরিবারের সদস্যরা ঘরে ফেরেননি। ঘরে পানির সঙ্গে বিপুল পরিমাণ পলি মাটিও জমে‌ছিল, সেগুলো প‌রিষ্কার করা হচ্ছে।

এদিকে উপজেলা এলাকায় অনেক গ্রামীণ রাস্তা এখনো পানির নিচে থাকায় যোগাযোগ-বিচ্ছিন্নতা দূর হয়নি। বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণসহায়তা অব্যাহত রেখেছে পুলিশ, র‌্যাব, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

সিলেট পা‌নি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বৃষ্টি কমে আসা এবং ভারত থেকে নতুন করে পাহাড়ি ঢল না নামায় বন‌্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কয়েক দিন এমন পরিস্থিতি থাকলে আরও উন্নতি হবে।