শেখ রাসেল পার্ক আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের নামে করার ঘোষণা
চট্টগ্রাম নগরের আমবাগান এলাকার শেখ রাসেল পার্কের নাম পরিবর্তন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ওয়াসিম আকরামের নামে নামকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন আজ মঙ্গলবার দুপুরে পার্ক পরিদর্শন করে এই ঘোষণা দেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯ সালে নগরের আমবাগান এলাকায় এই পার্ক নির্মাণ করেছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তখন মেয়র ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ওয়াসিম আকরাম গত ১৬ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে নগরের মুরাদপুরে নিহত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
আজ পার্ক পরিদর্শনের সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৬ বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করতে গিয়ে এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অনেকেই শহীদ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাঁদের কারও নামে কোনো পার্ক দিতে পারেননি। তাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে প্রথম শাহাদাত বরণ করা শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে এ পার্কের নামকরণের ঘোষণা দিচ্ছেন। আজ থেকে এই পার্কের নাম হবে শহীদ ওয়াসিম পার্ক।
সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, এই পার্ক প্রায় সময় বন্ধ থাকে এবং ময়লা-আবর্জনার জন্য লোকজন আসেন না। এখন থেকে উন্মুক্ত থাকবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হবে। পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা হবে। সবাই এখানে আসতে পারবেন এবং হাঁটতে ও ঘুরতে পারবেন।
পরে মেয়র শাহাদাত হোসেন নগরের আগ্রাবাদে কর্ণফুলী শিশু পার্ক পরিদর্শন করেন। তা বন্ধ পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এটি খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
অতি বাণিজ্যিকীকরণের কারণে চট্টগ্রামের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, গত এক দশকে মানুষের সুস্থ বিনোদনের স্থানগুলোয় অতি বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। যেমন বিপ্লব উদ্যানে দৃষ্টিনন্দন একটা পার্ক ছিল। সেখানে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ছিল। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে একটা মাফিয়া চক্র সেখানে দোকান তো আগেই করেছে। নতুন করে আবারও দোকান দেওয়ার পাঁয়তারা করছিল। তাঁরা তা ভেঙে দিয়েছেন।
দুটি পার্ক পরিদর্শনের সময় মেয়র শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান প্রমুখ।