কালো বোরকা পরে ঘুরছিলেন তরুণী, আটকের পর জানা গেল, তিনি ভারতীয়
কালো রঙের বোরকা পরে সড়কে ঘোরাফেরা করছিলেন এক তরুণী। স্থানীয় ব্যক্তিদের সন্দেহ হলে বিষয়টি তারা গ্রাম পুলিশকে জানায়। পরে গ্রাম পুলিশের সহায়তা এক ইউপি সদস্য তাঁকে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে এলে জানা যায়, তিনি ভারতীয়। পরে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় বিজিবির হাতে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজিবি তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বামনপাড়া এলাকার পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়ক থেকে তাঁকে আটক করে ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে আনা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ওই তরুণী ভারতের মুম্বাইয়ের বান্দ্রা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন। তাঁর বয়স আনুমানিক ২৩ বছর।
ভজনপুর ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. কাজিম উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমাদের ইউপির একজন গ্রাম পুলিশের মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি জানান কালো বোরকা পরা এক নারী ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। খবর পেয়ে আমি গ্রাম পুলিশদের নিয়ে তাঁকে খুঁজতে বের হই। পরে আমরা পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের বামনপাড়া এলাকায় ওই তরুণীকে হাঁটতে দেখি। পথে তাঁকে থামিয়ে আমরা কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি হিন্দিতে কথা বলা শুরু করেন। বাংলা বুঝছিলেন না। পরে তিনি হিন্দিতে আর ইংরেজিতে তাঁর নাম-ঠিকানা বলেন।
ইউপি সদস্য কাজিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘পরে আমরা ওই তরুণীকে ইউপিতে নিয়ে আসি। আমরা তাঁকে কাগজে তাঁর নাম-ঠিকানা লিখতে বললেও তিনি ইশারা-ইঙ্গিতে জানান তিনি লিখতে পারেন না, শুধু টিপসই দিতে পারেন। এ সময় তাঁর কথাবার্তায় অসংলগ্ন মনে হয়েছিল। তাঁর হাতে বাংলাদেশি ৬টি ১০ টাকার নোট ছিল। তিনি কোন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন, এ তথ্যও দিতে পারেননি। শুধু বলছিলেন, মুক্তা নামের একজন তাঁকে আসতে বলেছিলেন। ওই সময় তিনি পঞ্চগড় জেলা শহরের দিক থেকে এই এলাকায় এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া তাঁর কাছে কোনো ব্যাগ বা মুঠোফোন কিছুই পাওয়া যায়নি। পরে আমরা তাঁকে বিজিবির হাতে তুলে দিয়েছি।’
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন ওই তরুণীকে আটক করে আমাদের খবর দিয়েছিলেন। পরে আমরা ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি ভারতীয়। পরে তাঁকে তেঁতুলিয়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এই ব্যাপারে পুলিশ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। ’
তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় বলেন, ‘বিজিবি সদস্যরা একজন তরুণীকে থানায় হস্তান্তর করেছেন। আমরা শুনেছি, ওই তরুণী ভারতীয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’