সিলেটে মুক্তিপণ না পেয়ে ছাদ থেকে ফেলে যুবককে হত্যার অভিযোগ
সিলেটের গোলাপগঞ্জের এক যুবককে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার রাতে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অপরণকারীদের মারধরে আরও এক যুবক আহত হয়েছেন।
মারা যাওয়া ওই যুবকের নাম আবুল হাসান (২৬)। তাঁর বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর পূর্বভাগ কলাশহর গ্রামে। বুধবার বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আবুল হাসানের পরিবার। আহত যুবক আবুল হাসানের চাচাতো ভাই।
নিহত যুবকের স্বজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর থেকে সিলেট শহরে আসার উদ্দেশ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন আবুল হাসান ও তাঁর চাচাতো ভাই। এ সময় ওই সিএনজিচালিত অটোরিকশায় দুই যুবক বসা ছিলেন। গোলাপগঞ্জ বাজার এলাকায় পৌঁছালে আরও দুই যুবক অটোরিকশায় ওঠেন। পরে অটোরিকশাটি সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার ওভারব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে আরও এক যাত্রী ওঠেন।
এরপর অটোরিকশায় থাকা আবুল হাসান ও তাঁর চাচাতো ভাইকে কৌশলে অজ্ঞান করা হয়। পরে অপহরণকারীরা তাঁদের সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকার একটি ভবনের ছাদে নিয়ে যান। এ সময় অপহরণকারীরা তাঁদের মারধর করে মুক্তিপণের জন্য তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে বলেন। কিন্তু এ কথা না শোনায় অপহরণকারীরা মারধর করে আবুল হাসানকে পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেন এবং তাঁর চাচাতো ভাইকেও মারধর করেন।
পরে অপহরণকারীরা সেখান থেকে চলে গেলে আবুল হাসানেরর চাচাতো ভাই ভবনের নিচে গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে বিষয়টি জানান। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে আবুল হাসানের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে আবুল হাসান মারা যান।
আবুল হাসানের খালাতো ভাই আরব আলী প্রথম আলোকে বলেন, আবুল হাসানের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আহত অপর যুবক সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্বজনেরা বুধবার বিকেলে আবুল হাসানের লাশ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আবুল হাসানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, স্বজনেরা বুধবার বিকেলে আবুল হাসানের লাশ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আবুল হাসানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যুবকের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।