খুলনার পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৩ গ্রাম প্লাবিত
খুলনার উপকূলীয় উপজেলা পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামের রেখামারী খালের গোড়ার দিকের ওই বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, কালীনগর গ্রামের পাশেই রয়েছে ভদ্রা নদী। দুপুরের দিকে সেখানে পাউবোর ২২ নম্বর পোল্ডারের উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধের প্রায় ৯০ ফুটের মতো অংশ ভেঙে যায়। এ সময় ওই পোল্ডারের ভেতরে থাকা ১৩টি গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ শুরু করে।
প্লাবিত গ্রামগুলো হলো কালীনগর, দারুল মল্লিক, গোপী পাগলা, তেলিখালী, সৈয়দখালী, খেজুরতলা, সেনের বেড়, হাটবাড়ি, ফুলবাড়ী, বাগীরদানা, দুর্গাপুর, হরিণখোলা ও নোয়াই।
৪ নম্বর দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পলাশ রায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘বেড়িবাঁধের একটি অংশে ফাটল ছিল বলে শুনেছিলাম। আজ বৃহস্পতিবার সকালে লোকজন নিয়ে সেটি দেখতে গেলে আমার চোখের সামনেই বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর এলাকার জনপ্রতিনিধিদের জানালাম। এই পোল্ডারের আওতায় থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডের মন্দির–মসজিদে যত মাইক আছে সেগুলো দিয়ে খবরটা প্রচারের ব্যবস্থা করি। এরপর আমরা স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা করি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে তাঁদের প্রতিনিধিরাও আসেন। ২০০ বাঁশ আনা হয়েছে। দুটি মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে কাজ চলমান আছে।’
তিনি আরও বলেন, ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ায় এখানকার গ্রামের সব চিংড়িঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে, বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে ২২ নম্বর পোল্ডারের গোপী পাগলা গ্রামের বাঁধ ভেঙে এই ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ২২ নম্বর পোল্ডারের মধ্যে পড়েছে। দেলুটি ইউনিয়নটি পড়েছে খুলনা পাউবো সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ-২-এর আওতায়। ওই বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ২২ নম্বর পোল্ডারের আয়তন প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর। ভদ্রা নদীর ৩০ মিটারের মতো ভেঙে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি আটকানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। পুরোদমে কাজ চলছে।