বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে সিলেটে ১৫ দিন পর পিপি বদল
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে ১৫ দিন পর সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আশিক উদ্দিন।
গত বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের (সলিসিটর উইং) উপসলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহ্রুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানানো হয়। তবে আদেশের বিষয়টি আজ রোববার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
যোগাযোগ করলে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এখনো তাঁর হাতে আদেশের কপি পৌঁছায়নি।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে পিপি পদে নিয়োগ পান জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন। এরপরই তাঁর নিয়োগ বাতিলের দাবি করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতপাড়ায় ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ফয়েজের কক্ষে তালাও ঝোলানো হয়।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, বিএনপিতে ফয়েজের সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, অনুপস্থিতি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের আইনি সেবাদানে তাঁর বিতর্কিত ভূমিকার কারণে একসময় আইনজীবী ফোরামের সভাপতির পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হয়ে সপরিবার স্থায়ীভাবে সেখানে পাড়ি জমান। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে ফিরে তিনি পিপি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভুল বুঝিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি বাগিয়ে নেন। তাই তাঁরা নবনিযুক্ত পিপি এ টি এম ফয়েজকে পরিবর্তনের দাবি জানান।
তবে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগের বিষয়ে এ টি এম ফয়েজ গত ১৭ অক্টোবর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘চাওয়া না-পাওয়ার বেদনা থেকে ৮–১০ জন প্রতিবাদ করেছেন। একসময় ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ করেছি ঠিক। তবে ২২ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে আমি জড়িত।’
এর আগে ১৬ অক্টোবর রাতে আইন ও বিচার বিভাগের উপসলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহ্রুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক আদেশে সিলেট জেলা ও সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে ১০৩ জন সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এরপরই পিপি পদে পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।