প্রার্থী হবেন কি না তিন সপ্তাহ পর জনসভা করে জানাবেন মেয়র আরিফুল
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হবেন কি না, তা জানতে আরও তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ৪২টি ওয়ার্ডের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে জনসভা করে প্রার্থিতার বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এর আগে ১৫ এপ্রিল তিনি জানিয়েছিলেন, ঈদের পর প্রার্থিতা নিয়ে তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করবেন। তবে ঈদ শেষ হওয়ার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
আরিফুল হক চৌধুরী বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সিলেট জেলা কমিটির সদস্য। তিনি বিএনপির সিলেট মহানগরের সভাপতি ও জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। বিএনপির মনোনয়নে টানা দুবার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তৃতীয়বারের মতো সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁর আগ্রহ থাকলেও বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে তিনি ‘দোটানায়’ পড়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী ২৩ মে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। এর আগে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে নগরবাসীর উপস্থিতিতে জনসভা করে নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। প্রার্থী হব কি না তখনই স্পষ্ট হবে। এ কয়টা দিন দলের কর্মী–সমর্থক, নেতাসহ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে দলের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসানকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর বাইরে জাতীয় পার্টিসহ একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীও তৎপর আছেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাই দলের সবাইকে নির্বাচন করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
নগর বিএনপির একাধিক নেতা ও আরিফুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন মেয়র আরিফুল। দলমত–নির্বিশেষে নগরের অনেক ভোটার তাঁকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি নিজেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন। তবে ইভিএমে ‘ভোট ছিনতাই’ হওয়ার আশঙ্কায় আছেন মেয়র আরিফুল।
রাজনীতি–সচেতন কয়েক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী না হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ‘খালি মাঠে গোলের সুযোগ’ দেওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে ২০২১ সালের আগস্টে পদত্যাগকারী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহস্বেচ্ছাবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন। এ ছাড়া সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার ‘বিদ্রাহী’ প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হলে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।