সুনামগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ

দুর্নীতিপ্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আওয়ামী লীগ দলীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অবৈধভাবে শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল রোববার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে এ–সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি। বিষয়টি তদন্ত করে দুদককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

অভিযুক্ত ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আজাদ হোসেন। তিনি বালিজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। আর অভিযোগকারী সুনামগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা। তবে নিরাপত্তার কারণে আবেদনে তিনি তাঁর পূর্ণাঙ্গ পরিচয় উল্লেখ করেননি।

লিখিত আবেদনে ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, বালিজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন মাহতাবপুর গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে (গত ১৬ বছরে) প্রভাব খাটিয়ে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মরাটিলা এলাকায় ২১ শতাংশ জমির ওপর বিলাসবহুল ছয়তলা একটি ভবন আছে। জমিসহ ভবনটির দাম প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ শহরের নতুনপাড়া, হাসননগরসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁর নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে বাসাবাড়ি ও জমি আছে। গত পাঁচ বছরে স্ত্রীর নামে অন্তত ৫০ একর জায়গা কিনেছেন; যার দাম ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া জলমহাল ও বালুমহাল থেকে শুরু করে নামে-বেনামে সম্পদ আছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তাহিরপুর উপজেলা সদরে আজাদ ২ কোটি টাকায় একটি দোকান কেনার পাশাপাশি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় ২০ একর জায়গার ওপর ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোরগ ও ডিম উৎপাদনের খামার তৈরি করেছেন। সেই সঙ্গে সিলেট সদর উপজেলার সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে আজাদের একটি সিএনজি পেট্রলপাম্প নির্মাণাধীন। রাজধানী ঢাকাতেও তাঁর অত্যাধুনিক একটি ফ্ল্যাট আছে। ২০২২ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার সব সম্পদ বৈধ। ইনকাম ট্যাক্স ফাইলে আমার যাবতীয় সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ আছে। দুদকে যেসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তা মিথ্যা। আমার স্ত্রীর নামে যে জমি কেনা হয়েছে বলে বলা যাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপর কিছু ব্যক্তি আমার কাছে চাঁদা চেয়েছিল। অনেকে মিথ্যা ছড়াচ্ছে। আমার যা আছে, সব বৈধ।’

প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ওই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তাঁর কোনো খামার ও রাজধানীতে অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট নেই। এমন অভিযোগের জেরে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।