যারা ক্ষমতায় থাকতে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাদের আবার কিসের নির্বাচন: জামায়াতের আমির

নাটোরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। শুক্রবার শহরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠেছবি: প্রথম আলো

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সম্প্রতি কথা উঠেছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না? কিন্তু নির্বাচন তো তাঁদের জন্য, যাঁরা মানুষকে সম্মান করেন। যাঁরা দেশবাসীকে ভালোবাসেন। যাঁদের কাছে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি আমানত। এই বিশ্বাসে যারা বিশ্বাসী নয়, তাদের কপালে নির্বাচন নাই। তারা তিনটি নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালে তাণ্ডব চালিয়েছেন। তারা তো নির্বাচনেই বিশ্বাস করে না, তাদের আবার কিসের নির্বাচন?’

আজ শুক্রবার সকালে নাটোর শহরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতের জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। জেলা জামায়াতের আমির মীর নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি সাদেকুর রহমান।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাই, অতিজরুরি সংস্কারগুলো সাধন করে বর্তমান সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে তাঁরা যার যার জায়গায় চলে যান। এই নির্বাচনে জনগণ যাঁকে ভালোবাসেন, যাঁর ওপরে আস্থা রাখতে পারবেন, যাঁদের দেশের দায়িত্বটা দিলে দেশের মানুষকে সম্মান করবেন, ভালোবাসবেন তাঁদের বেছে নেবেন। দেশের মানুষের আমানত যাঁরা শ্বশুরবাড়ির নিয়ামত মনে করবেন না, প্রতিটি আমানতের পাই পাই করে হিসাব রাখবেন, তাঁদেরই তাঁরা বেছে নেবেন।’

জামায়াতের আমির বলেন, যারা চুরি করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, যেমনটি গত সাড়ে ১৫ বছরে করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, তাদের দ্বারা বিদেশে পাচার করা অর্থের পরিমাণ ২৬ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের পাঁচ গুণ। তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবেন। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা অন্যদের চোর বলেছে, আসলে কথায় আছে—চোরের মায়ের বড় গলা। যারা আকাম-কুকাম করেছে, বাংলাদেশকে ফোকলা করেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুটপাট করেছে, গণডাকাতি করেছে, তাদের প্রতি জনগণ আস্থা রাখবেন না।

সরকারকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী সিন্ডিকেট এখনো বসে আছে। আবার নতুন সিন্ডিকেটও জায়গা করে নিয়েছে। তবে সিন্ডিকেটকারীরা বলছে, আমাদের জমিদারি এখন নতুন জমিদারের হাতে চলে গেছে। আমাদের হাতে এখন আর নাই। তবে আমরা জামায়াতে ইসলামী নতুন-পুরাতন সিন্ডিকেট দেখতে চাই না। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে সিন্ডিকেট ধ্বংসে সরকারকে সাহায্য করতে চাই।’ তিনি সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে, দেরি না করে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে হতাহতদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ ব্যাপারে সরকারের দৃশ্যমান উদ্যোগ দাবি করেন।

কর্মী সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে ৯টায়। তবে ভোর থেকেই হাজারো কর্মী-সমর্থক জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন। বেলা ১১টার মধ্যে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠ কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়।