রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান-সচিব লাঞ্ছিত, দুই কর্মকর্তা সাময়িক বহিষ্কার

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডফাইল ছবি

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিবকে নিজ কার্যালয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনায় শিক্ষা বোর্ডের সচিব বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নগরের রাজপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম এবং সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল করিম।

বোর্ডের চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে একজন সেবাগ্রহীতার সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেসব সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার জন্যই সোমবার দুপুরে বহিরাগতদের নিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে যান তিনি।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার দুপুরে জাহিদুর রহিম ও তাঁর ভাই আমিনুল করিমসহ ১০-১৫ জন ব্যক্তি বোর্ডের চেয়ারম্যান অলীউল আলমের কক্ষে ঢোকেন। তাঁদের মধ্যে আলোচনার এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় দরজার সামনে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর বোর্ড চেয়ারম্যান সচিব হুমায়ুন কবিরের কক্ষের সামনে যান। সচিবও ওই সময় বের হন। এ সময় সচিবকেও মারার জন্য তেড়ে যান। এ ছাড়া চেয়ারম্যান ও সচিবকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন বহিরাগতরা।

শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, জাহিদুর রহিম ও তাঁর ভাই আমিনুল করিম একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজনকে নিয়ে বোর্ডে যান। তিনি তাঁদের সামনে অভিযোগ তোলেন, চেয়ারম্যান ও সচিব দুর্নীতি করেছেন। আর অন্যায়ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে চেয়ারম্যান কাগজপত্র বের করে দেখান, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। বরং জাহিদুর রহিমের অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারপরও বোর্ডে চেয়ারম্যান ও সচিবকে লাঞ্ছিত করা হলে পুলিশ যায়। সেনাবাহিনীর একটি দলও আসে। এরপর বহিরাগতরা চলে যান।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অলীউল আলম বলেন, তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং বহিরাগতদের নিয়ে এসে বোর্ডে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির অভিযোগে জাহিদুর রহিম ও তাঁর ভাই আমিনুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই ভাইসহ ৩০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জাহিদুর রহিমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন বলেন, বোর্ডে সচিব ও চেয়ারম্যানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে উল্লেখ করে সচিব হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁরা তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করবেন।