আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। কোথাও বিএনপি, কোথাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কোথাও তৌহিদী জনতা আবার কোথাও নাগরিক সমাজের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সব কটি কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমগুলোর অপপ্রচারের নিন্দা জানানো হয়।
রাজশাহী
রাজশাহীতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করেছে বিএনপি। নগরের মালোপাড়ায় ভুবন মোহন পার্ক থেকে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় শেষ হয়। ভুবন মোহন পার্কে সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মামুন-অর-রশিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীসহ দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশে বিশ্বনাথ সরকার বলেন, ‘ভারতে আগ্রাসনবাদী মোদি হিন্দুদের দিয়ে মুসলমানদের সংখ্যালঘু বানিয়ে মসজিদ দখল করছেন। তাঁরা বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্র বানাতে চান। ভারত চায়, আমরা দিল্লির আজ্ঞাবহ হয়ে থাকি। এত দিন আওয়ামী লীগ সেই গোলামি করেছে। এ দেশে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই।’
মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মামুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ভারত চায় এ দেশ, এ দেশের জনগণ তাদের গোলাম হয়ে থাকুক। এ যাবৎ তাদের গোলামি করেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়েছেন। তারপর থেকেই ভারত সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা এ দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। এ দেশের সরকারকে অকার্যকর করতে চায়। তারা ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা করেছে, পতাকা ছিঁড়েছে। যে উদ্দেশ্যে এগুলো করেছে, তা কোনো দিনও সফল হবে না।’
রংপুর
রংপুর শহরে আজ বিকেল চারটার দিকে গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে মহানগর বিএনপি। মিছিলটি পায়রা চত্বরে পৌঁছালে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান বলেন, ‘ভারতীয় সন্ত্রাসী বাহিনী বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে হামলা করে আমাদের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করেছে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ভারতীয়রা হুমকি দিচ্ছে। ভারতের মোদি সরকারকে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশের জনগণ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। বাংলাদেশের সরকার কারও করুণা নিয়ে রাষ্ট্র চালাতে চায় না।’
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুন্নবী, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরনবী মিলন, সদস্যসচিব আতিকুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন, সদস্যসচিব নুর হাসান, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান খান প্রমুখ।
সিলেট
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে একটি মিছিল নগরের বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট এলাকা থেকে শুরু হয়ে চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। কর্মসূচিতে বিএনপির সিলেট জেলা, মহানগর ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে যে দেশে দূতাবাস অবস্থিত, সেই দেশের পক্ষ থেকে ভিন্ন দেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। আমরা যেভাবে ভারতের প্রতিটি দূতাবাস ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দিচ্ছি, ঠিক সেভাবেই আমাদের প্রতিটি দূতাবাস ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ভারতের। এ ক্ষেত্রে আমাদের দূতাবাসগুলোয় যদি আর কোনো হামলা হয়, তাহলে আমরা ধরে নেব এটির পেছনে পালিয়ে যাওয়া অপশক্তির ইন্ধন আছে।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন, জেলার যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহমদ পাটোয়ারি, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাফেক মাহবুব, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক আহাদ চৌধুরী প্রমুখ।
কুমিল্লা
কুমিল্লা নগরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি। কুমিল্লা মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলটি একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ‘জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে যে ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। শেখ হাসিনা ছিল স্বৈরাচার। বাংলাদেশের মানুষ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। আমার প্রশ্ন ভারতের এত জ্বলে কেন? কারণ একটাই—শেখ হাসিনা থাকাকালীন যা ইচ্ছা তা চুক্তি করে ভারত বাংলাদেশকে তাঁদের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছিল। শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পর তাঁদের এই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এ জন্য তাঁরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।’
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন-উর রশিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে কোনো প্রকার কম্প্রোমাইজ করবে না। তারা (ভারত) এখন চেষ্টা করছে বিভিন্নভাবে উসকানি দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে, আমাদের দুর্বল করতে। যারা এই চিন্তা করছেন তাদের প্রতি আমার প্রথম অনুরোধ; কোনো লাভ হবে না। কারণ, আপনারাও স্বপ্ন দেখেছিলেন কেয়ামত পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখবেন; কিন্তু আল্লাহর রহমতে সেটি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের জনগণের প্রতিবাদের মুখে নোটিশ না দিয়েই ফ্লাই করতে হয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে।’
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী, সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লাসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
ফরিদপুর
বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে মুজিব সড়ক দিয়ে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন, আলী আশরাফ ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান, দেলোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন প্রমুখ।
শেরপুর
সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে শহরে মিছিল হয়। মিছিলটি শহরের রঘুনাথ বাজার থানা মোড় থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে শেরপুর সরকারি কলেজের লিচুতলায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শেরপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. মামুনুর রহমান বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা সহ্য করতে পারে না। এরই ধারাবাহিকতায় আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। ভারতের অধিকাংশ গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা আজ দুপুরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল আলফাত স্কয়ারে যায়। সেখানে সমাবেশ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখবে বাংলার জনগণ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারত তাদের হীন স্বার্থে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। বাংলাদেশকে বিগত দিনগুলো ভারত কুক্ষিগত করে রেখেছিল। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। এটা হতে দেওয়া যাবে না।
সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুনামগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ইমন দ্দোজ আহমদ, সংগঠক হুমায়ুন আহমেদ, আরশাদ মাহমুদ, মুসা আস সাকিব, রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।
রাজবাড়ী
আজ বিকেলে জেলা বিএনপির আয়োজনে দলের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব হয়ে পান্না চত্বর এলাকা ঘুরে রেলগেট শহীদ স্মৃতি চত্বরে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, সদস্যসচিব কামরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম শিকদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম শওকত সিরাজ প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিলে রাজবাড়ী জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মী অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশকে অশান্ত করার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
পটুয়াখালী
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মিছিলটি বের হয়। মিছিল বাউফল পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বাউফল থানার পাশে শাপলা চত্বরে শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় সংবাদকর্মী শিবলী সাদেক, চাকরি আল আমিনসহ বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ভারত সরকার মুসলিমদের মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করে। সেই ভারত সরকার বাংলাদেশের হিন্দু, মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে বাংলাদেশি হিসেবে শান্তিতে থাকুক, তা চায় না। তারা বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। ভারতের অধিকাংশ গণমাধ্যম মনগড়া ও ভুল তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে। বক্তারা প্রতিটি সীমান্ত হত্যার বিচার এবং ভারতের সঙ্গে করা দুই দেশের অসম চুক্তিগুলো বাতিলের দাবি জানান।
জয়পুরহাট
আজ সন্ধ্যায় শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দান থেকে মশাল মিছিল বের হয়। এটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে পাঁচুর মোড়ে শেষ হয়। সেখান প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ‘জয়পুরহাটের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে এই মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জয়পুরহাটের সমন্বয়ক হাসিবুল হক, কে এম সাজিন, নিয়ামুর রহমান, রিসালাত হোসেন, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহারাফ ইসলাম, ক্ষেতলাল উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি দেওয়ান হাসান, জেলা ছাত্রশিবিরের সাথী সদস্য আবুল বাশার ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মশাল মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে করে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘দূতাবাসে হামলা কেন, নরেন্দ্র মোদি জবাব দে’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধ্বংস হতে দেব না’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাঁড়াও জনগণ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ এখনো পানির ন্যায্য হিস্যা পায় না, সেই পানি ভোগ করে ভারত। আমাদের দেশের নদীর যে স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি তা কোনোভাবেই বজায় থাকেনি এই ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে । জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার এসেছে, এখন পর্যন্ত তারা এই বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। গতকালকে বাংলাদেশের দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে তার কোনো সুরাহা এখন পর্যন্ত হয়নি। ভারত যত বড় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হোক না কেন, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা জনগণকে শাসন করতে পারবে না।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই, আপনাদের তাঁবেদার শেখ হাসিনার শাসনামল শেষ হয়েছে। বাংলাদেশকে আগের চোখে দেখলে আপনারা ভুল করবেন। বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে এ দেশের ছাত্র-জনতা যে বক্তব্য ছড়িয়ে দিচ্ছে সেদিকে খেয়াল করুন আপনারা। আগামী দুই কর্ম দিবসের মধ্যে যদি এই হামলার দায় বহন করে স্বীকার না করেন তাহলে আমরা আপনাদের (ভারতের) দূতাবাস ঘেরাও করতে বাধ্য হব। আপনারা দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর একটি ষড়যন্ত্র করে আসছেন সেটি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আমরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়েছি। আমরা আপনাদেরকেও রুখে দেব।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা]