স্ত্রীকে হত্যার পর ৯৯৯–এ ফোন করে বললেন, ‘স্যার, ও আত্মহত্যা করেছে, তাড়াতাড়ি আসুন’
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জামতলী এলাকা থেকে গত বুধবার রাত দুইটার দিকে ফাতেমা খাতুন (২৩) নামের এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করতে চাইলেও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফাতেমার স্বামী বিল্লাল হোসেন (২৮) বলেছেন, স্ত্রীকে তিনিই গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। হত্যার পর লাশ বাথরুমে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেন। এরপর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে বলেন, ‘স্যার, ও (স্ত্রী) আত্মহত্যা করেছে। তাড়াতাড়ি আসুন, স্যার।’
স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে একটি হত্যা মামলায় বিল্লাল হোসেনকে গতকাল বিকেলে কারাগারে পাঠিয়েছেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বিল্লাল হোসেনের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার জোড়দিঘী গ্রামে। আর নিহত ফাতেমা খাতুনের (২৩) বাড়ি জামালপুরের ঘোড়ধাপ গ্রামে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভালোবেসে বিয়ে করেন দুজন। তাঁরা দুজনই পেশায় নার্স ছিলেন। এক বছর ধরে উখিয়া সদরের জামতলী এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থেকে পার্শ্ববর্তী এমএসএফ হাসপাতালে চাকরি করতেন তাঁরা।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতে বিল্লালের ভাড়া বাসায় যায় এবং বাথরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু লাশ দেখে মনে হয়নি ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন। তা ছাড়া আশপাশে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, বিল্লালের সঙ্গে ফাতেমার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। প্রায় সময় দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি, মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্বামী বিল্লালকে আটক করে থানায় আনা হয়। সেখানে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিল্লাল হোসেন স্বীকার করেন, স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজেই রশি দিয়ে বেঁধে সেই লাশ বাথরুমে ঝুলিয়ে রাখেন এবং নিজেকে বাঁচানোর জন্য ৯৯৯-এর ফোন দেন। আদালতেও বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ জানান, গতকাল কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নিহত ফাতেমা খাতুনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল রাতেই লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন স্বজনেরা।