সেচের পানি না পেয়ে কৃষক রবিও আত্মহত্যা করেন: অভিযোগপত্রে পুলিশ

কৃষক অভিনাথ মারানডির মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। সম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর নিমঘটু গ্রামে
ফাইল ছবি

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামের কৃষক রবি মারানডি সেচের পানি না পেয়েই বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার গোদাগাড়ী থানা-পুলিশ এ তথ্য জানায়।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, রবি মারানডি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার তদন্ত শেষে পুলিশের পক্ষ থেকে গত ২৯ এপ্রিল গোদাগাড়ী আমলি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ৮ মে অভিযোগপত্রটি আদালত গ্রহণ করেন। এর আগে ২৭ এপ্রিল কৃষক অভিনাথ মারানডি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, অভিনাথ মারানডি ও রবি মারানডির আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন অভিযুক্ত বলে তদন্তে জানা গেছে। সেচের পানি না পেয়ে বিষপানে দুই কৃষকের আত্মহত্যা বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। এ–সংক্রান্ত পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ধানের জমি ফেটে চৌচির হলেও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন দুই কৃষককে পানি দেননি। তিনি কাছের লোকদের আগে পানি দিতেন। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর চাষিদের পানির জন্য ঘোরাতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নিমঘটু গ্রামের সাঁওতাল কৃষক অভিনাথ মারানডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারানডি ২৩ মার্চ বিষপান করেন। এতে অভিনাথ সেদিন রাতেই মারা যান। আর রবি এক দিন পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় আলাদা দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়। প্রথম দিকে এই দুই কৃষক চোলাই মদ পান করে মারা গেছেন বলে প্রচার চালানো হচ্ছিল। পুলিশও প্রথমে সাধারণ ডায়েরি করেছিল। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাঁদের বিষক্রিয়ায় মারা যাওয়া কথা বলা হয়। এরপর পুলিশ আদালতে মামলা দুটির অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

ঘটনার ১১ দিন পর বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর ও ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন গ্রেপ্তার হন। বিএমডিএ সেদিনই তাঁকে চাকরিচ্যুত করে। তিনি এখন কারাগারে। অভিযোগপত্রে পুলিশ শুধু সাখাওয়াত হোসেনকেই অভিযুক্ত করেছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন