সিলেটে বিএনপি নেতাকে জুতাপেটার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি

বিএনপি

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে জুতাপেটা করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জেলা বিএনপি। এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ অভিহিত করে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আহ্বানও জানিয়েছেন সংগঠনের জেলা নেতারা।

গতকাল রোববার মধ্যরাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী জুতাপেটার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে লিলু মিয়ার ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাতে লিলু মিয়াকে জুতাপেটা করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী লিলু মিয়াকে গালি দিচ্ছেন আর জুতাপেটা করছেন।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সুহেল আহমদ লিলু মিয়ার উদ্দেশে বলছেন, ‘সেক্রেটারি আমি বানিয়েছি। কিগু (কারা) তোরে চিনত? আমার লগে তুই বিরোধিতা করস!’ এরপর সুহেল অশ্লীল গালি দিয়ে নিজের পায়ের জুতা খুলে লিলু মিয়াকে জুতাপেটা করেন।

বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় গত শনিবার বিকেলে লিলু মিয়া বিশ্বনাথ থানায় সুহেল আহমদ চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মারধর ও চুরির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলায় জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক যুবদল নেতাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় সাত থেকে আটজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুহেল আহমদ চৌধুরী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করায় তিনি তখন জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদ থেকেও বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। অন্যদিকে লিলু মিয়া সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদি লুনার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি লিলু মিয়া বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে পছন্দের ব্যক্তিদের পদ না দেওয়ার কারণে বিশ্বনাথের ওপর সুহেল ক্ষুব্ধ ও বিরাগভাজন হন। এর আগে ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর রাতে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সুহেল উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিনকে জুতাপেটা করেছিলেন।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সুহেল আহমদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

গত শনিবার রাতে লিলু মিয়া প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘সুহেল আহমদ চৌধুরী গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজের জন্য অনেক আগেই বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তিনি কেন হঠাৎ এমন আচরণ করেছেন, তা আমার জানা নেই।’

বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লিলু মিয়া বলেন, এমন কিছু নয়। বহিষ্কার হওয়ার পর থেকে বিএনপির সঙ্গে সুহেল আহমদ চৌধুরীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।