সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সব উপজেলা প্লাবিত
সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম ও এলাকা। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় জরুরি বৈঠকে বসেছে জেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও সিলেট সদর উপজেলা। জেলার ১৩টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে বলে স্থানীয় মানুষজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ভারতের উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। পাশাপাশি সিলেটে ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা হয়েছে। জেলার প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অন্য নদ-নদীর পানি উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলা ও উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী অন্তত ১০টি সড়ক তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসাবাড়িতেও পানিতে ঢুকেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট নগরের অন্তত ২০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি রয়েছে।
জনপ্রতিনিধি ও প্লাবিত এলাকার মানুষজন বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে অনেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সিলেটকে বন্যা দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন দাবি তুলেছে।
তাঁরা আরও বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা ঢলেই মূলত এ বন্যা দেখা দিয়েছে। আজ সকালেও কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে যেখানে হাঁটু পানি ছিল, সেখানে দেখা দিয়েছে কোমরসমান পানি। বাড়িতে পানি ঢুকায় গবাদিপশু কোথায় রাখবেন, এ নিয়েও অনেক গৃহস্থ চিন্তায় রয়েছেন। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত প্লাবিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ পৌঁছানোর দাবিও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার সাদাত বেলা পৌনে দুইটায় বলেন, সিলেটের প্রতিটি উপজেলাই কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন বৈঠক করছে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে প্লাবিত এলাকার মানুষজের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রীও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
কতটি গ্রাম বা কী পরিমাণ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন, সেটা জানাতে পারেননি আনোয়ার সাদাত। তিনি বলেন, বৈঠক শেষে সেটা জানানো সম্ভব হবে।