সিলেটে ছাত্রাবাসে ধর্ষণের মামলার আরেক আসামি রবিউল গ্রেপ্তার
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে তরুণী গণধর্ষণ মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে হাসানকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে। আজ রোববার রাত ১০টার দিকে পুলিশের একটি দল তাঁকে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে।
যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যা প্রথম আলোকে রবিউলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ছাতক থানা-পুলিশ। এর ঘণ্টাখানেক পর হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল গ্রামে। রবিউল ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার আহ্বায়ক।
শুক্রবার রাত পৌনে আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মোট নয়জনের বিরুদ্ধে ওই তরুণীর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। যে ছয়জনের নাম উল্লেখ করেছেন, তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। এই ছয়জন হলেন সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।
এজাহার অনুযায়ী, আসামি সাইফুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে। তাঁর বর্তমান ঠিকানা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের বাংলো। শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনির বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনিপাড়ায়। বর্তমান ঠিকানা ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের ২০৫ নম্বর কক্ষ। মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামে। রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জগদল গ্রামে। অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জের আটগ্রাম। তারেক সুনামগঞ্জ শহরের নিসর্গ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনার শুরু সিলেটের ১২৮ বছরের পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ফটকের সামনে থেকে। ফটকটি সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশেই। ফটকের ভেতরের মাঠে অনেকে বেড়াতে যান। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতিও সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে স্বামী গিয়েছিলেন সিগারেট কিনতে। ফিরে এসে দেখেন, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করছেন কয়েকজন তরুণ। স্বামী প্রতিবাদ করলে মারধর করে তাঁদের দুজনকে গাড়িসহ জোর করে তুলে নিয়ে যান ওই তরুণেরা। এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে একেবারে শেষ প্রান্তে নেওয়ার পর স্বামীকে একটা স্থানে আটকে রাখেন তাঁরা। তরুণীকে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা এলাকা ত্যাগ করেন। তরুণীর স্বামীর বরাত দিয়ে পুলিশ সাংবাদিকদের এ ঘটনা জানায়।