শিমুলিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ, দুর্ভোগে ঘরমুখো মানুষ
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম নৌপথ মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট। আজ শুক্রবার ভোর থেকে এ চাপ তৈরি হয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ঘাট এলাকায় পা ফেলার জায়গা নেই। সকাল থেকে ফেরিতে শুধু মোটরসাইকেল পারাপার করা হচ্ছে।
ঘাট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে মানুষ গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। গতকাল সাহ্রির পর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে চাপ বেড়ে যায়। আজ শুক্রবার সকালে পুরো ঘাট যাত্রী, যানবাহন ও মোটরসাইকেলের চাপে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহম্মেদ আজ সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। যাত্রী ও যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ। ঘাটের পার্কিংয়ের মাঠ গাড়িতে সম্পূর্ণ ভরা, সংযোগ সড়কেও একই অবস্থা। সড়কে গাড়ির সারি। সব মিলিয়ে আট শতাধিক গাড়ি এ পথে পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় আছে। সেই সঙ্গে তিন থেকে চার হাজার মোটরসাইকেল আছে। সকাল থেকে শুধু মোটরসাইকেল পারাপার করা হচ্ছে। যানবাহন পারাপারের জন্য এ ঘাটে ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের ১০টি ফেরি আছে।
সকাল ১০টার দিকে শিমুলিয়া ঘাটে প্রবেশপথে শিমুলিয়া-ভাঙা মোড়ে পুলিশের তল্লাশি চৌকি দেখা যায়। সেখানে যানবাহন থেকে যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে ঘাটের দিকে আসছেন। সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে যানবাহনের সারি। ঘাটে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে যাত্রী ও যানবাহনের বিশাল জটলা।
শরীয়তপুরগামী ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী আরিফ হোসেন বলেন, ‘দিবাগত রাত তিনটার দিকে উত্তরা থেকে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাব। ঘাটে এসেই যানজটে পড়েছি। বেলা ১১টায় ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পেয়েছি।’
সাবেরা সুলতানা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ছেলেদের নিয়ে ঢাকায় থাকি। শুধু দুটি ঈদেই ওদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাই। বড় ছেলে অসুস্থ। ভোর থেকে গরমের মধ্য অপেক্ষা করছি। ছেলেরা ঢাকায় ফিরে যেতে চাইছে। আর কয়টা ফেরি বাড়ালে যাত্রী ভোগান্তি কম হতো।’
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছেন তিনি। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন। গরমে খুব ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এস এম আশিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার খুব কাছে শিমুলিয়া ঘাট। এ জন্য সাহ্রির পর থেকে মানুষ ঘাটে আসতে শুরু করেন। যানবাহনের যে চাপ আছে, এটি বিকেলের মধ্যে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। এ নৌপথে শুধু হালকা গাড়ি পার হয়। চলাচলকারী ১০টি ফেরি দিয়েই চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব। ঘাটে অপেক্ষমাণ যানবাহনকে শৃঙ্খলায় আনতে প্রশাসন চেষ্টা করছে।