শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে ‘ভিসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে ‘ভিসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’র চিকা মারা হয়েছে। ‘ভিসি পদ ফাঁকা আছে’ লেখা এই চিকা গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীদের নজরে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, আন্দোলনকারী ২৪ শিক্ষার্থীর অনশন সত্ত্বেও উপাচার্যের ‘টনক না নড়ায়’ দেয়ালে দেয়ালে এ ‘চিকা’ মেরে থাকতে পারেন কেউ।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন ২৪ শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ১১ জন অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন নজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাতে উপাচার্য তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করেছেন, এরপর আর বের হননি। এদিকে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারপরও ভিসির টনক নড়ছে না। অনশনকারীদের মধ্যে কেউ মারা গেলেই উপাচার্যের টনক নড়বে।
আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পুলিশ দিয়ে পিটিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং গুলি ছোড়া হয়েছে উপাচার্যের নির্দেশে। তিনি আমাদের কথা চিন্তা করেন না, বিধায় এসব করিয়েছেন। আমরা তাঁকে চাই না। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেন, শিক্ষার্থীদের ভালোবাসবেন, সে রকম একজন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হোক।’
‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’র চিকা মারার বিষয়ে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে প্রচুর বহিরাগত আছেন। এটি কারা দিয়েছে, তা বলতে পারছি না।’
আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। শনিবার সন্ধ্যার দিকে হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।