‘শাল্লার ঘটনা ঠেকাতে ব্যর্থ প্রশাসন ও পুলিশ’
সুনামগঞ্জের শাল্লার সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঠেকাতে প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা ব্যর্থ দাবি করে তাঁদের অপসারণ চেয়ে সিলেটে বিক্ষোভ করেছেন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে বক্তারা ঘটনাটিকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ উল্লেখ করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি করেন। এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আজ বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। নোয়াগাঁওয়ের আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই গ্রামে গিয়ে হামলা চালান। এ সময় নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘু পরিবারের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। হামলা হতে পারে, এ আশঙ্কায় ওই গ্রামের লোকজন গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পাশের গ্রাম ও হাওরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ হামলা পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে বক্তারা বলেন, দেশের নানা স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার বিচার না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সরকার মুখে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বললেও মৌলবাদী গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে দেশে নানা স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। তাই এর দায় সরকারের। মঙ্গলবার রাত থেকে হামলার প্রস্তুতি চলছিল উল্লেখ করে বক্তারা শাল্লার ঘটনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করেন। এ জন্য তাঁরা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অপসারণ করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. নাবিল হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট মহানগরের সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাস, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী, ছাত্র ফ্রন্ট মহানগরের আহ্বায়ক সঞ্জয় শর্মা, ছাত্র ইউনিয়ন মহানগরের সহসাধারণ সম্পাদক মনীষা ওয়াহিদ, সংস্কৃতিকর্মী তমিস্ত্রা তিথী প্রমুখ।
মিছিল ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে একাত্ম হন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সদস্য মতিউর রহমান, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ সিলেটের উপদেষ্টা প্রণব জ্যোতি পাল, ছাত্র ফ্রন্ট নগর শাখার সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান ও ছাত্র ইউনিয়ন এমসি কলেজ সংসদের সাবেক সভাপতি বিশ্বপা ভট্টাচার্য।