লালমাই পাহাড় কাটা বন্ধ ও সংরক্ষণের দাবিতে বেলার আইনি নোটিশ

পাহাড়-টিলা রূপ নিচ্ছে সমতল ভূমিতে। অবাধে মাটি কাটার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গহিন বনও। কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে রাতের আঁধারে দেদার চলছে এই প্রকৃতি নিধনযজ্ঞ
ফাইল ছবি

কুমিল্লার লালমাই পাহাড় কাটা বন্ধ ও সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে ১১ জন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ শুক্রবার আইনি নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক শওকত আরা কলি।

১১ কর্মকর্তার মধ্যে আছেন ভূমি সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের কুমিল্লার উপপরিচালক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।

বেলার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীরের সই করা নোটিশে বলা আছে, ‘বেলা প্রত্ন সম্পদে ভরপুর লালমাই পাহাড় কাটা অবিলম্বে বন্ধ করে এর যথাযথ সংরক্ষণের জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ওই পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে ইতিমধ্যে পাহাড়ের যে অংশটুকু কেটে ফেলা হয়েছে, সেখানে দেশীয় প্রজাতির গাছ দিয়ে বনায়নের জোরালো দাবি জানাচ্ছে।’ লালমাই পাহাড় কাটা রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বেলা ১১ সরকারি কর্মকর্তার কাছে সাত দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, গত ১২ জানুয়ারি প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘রাস্তা বাড়াতে লালমাই পাহাড়ে কোপ’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেলা আইনি নোটিশ দেয়। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ওই এলাকায় পাহাড় কাটাও বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আইনি নোটিশের জবাব আমি দিইনি। অন্যরা দিয়েছেন কি না, আমার জানা নেই। লালমাই পাহাড় রক্ষার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর তৎপর রয়েছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, লালমাই পাহাড় ও টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এই পাহাড় কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। একে রক্ষা করতে হলে সবার আগে জনপ্রতিনিধিদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। যাঁরা পাহাড় কাটেন তাঁরা জনপ্রতিনিধিদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকেন। বেলার আইনি নোটিশ কার্যকর হলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও প্রতিবেশ রক্ষা হবে।