বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, ‘যত শক্তিশালী ভাবা হয়, আমি মনে করি, সরকার তত শক্তিশালী নয়। সরকার যদি তত শক্তিশালী হতো, তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবের মুখ থেকে ফরিদপুরের সম্মেলনে এ কথা বের হতো না।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগে থেকেও কোটি কোটি টাকা পাচার করে, এরা কারা? এদের চিহ্নিত করতে হবে। ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘উনি তো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। কোর্টে নেওয়ার আগে, জনতার আদালতে দাঁড়ানোর আগেই উনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।’
আজ শনিবার দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাব চত্বরে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মোহাম্মদ শাহজাহান এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘নোয়াখালীর মানুষকে আমি বুদ্ধিমান মনে করি। ওবায়দুল কাদের সাহেবও বুদ্ধিমান। কারণ, উনি বুদ্ধিমান বলেই অনেক আগেই স্বীকারোক্তি দিয়ে দিয়েছেন। উনি সময়মতো বলবেন, আমি তো আগেই স্বীকারোক্তি দিয়েছি। আমাকে অত্যাচার করো কেন।’
নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান আরও বলেন, ‘একটা সময় আসতেছে, আওয়ামী লীগের একটা আরেকটাকে চোর বলবে। এ বলবে আমি নই, তুই চোর, ও বলবে আমি নই ওইটা চোর। আওয়ামী লীগের নেতাদের যেভাবে বোধোদয় হচ্ছে, আমি আশা করব, আমাদের প্রশাসনের ভাইদের বোধোদয় হবে।’
সমাবেশে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে প্রমাণিত হয়েছে, যেকোনো পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ মোকাবিলার শক্তি নোয়াখালী বিএনপির রয়েছে। বিএনপি নেতাদের নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপির নেতারা ঐক্যবদ্ধ। নীতির প্রশ্নে, দলের প্রশ্নে, তাঁদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
জেলা বিএনপির সভাপতি এ জেড এম গোলাম হায়দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ারুল হক, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজগর উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজকের প্রতিবাদ সমাবেশটি ছিল জেলা শহরে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির সবচেয়ে বড় জমায়েত। সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন। সমাবেশে কয়েক হাজার দলীয় নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেছেন। বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া এই সমাবেশ বেলা দেড়টার দিকে শেষ হয়। সমাবেশের সময় পাশের রেড ক্রিসেন্ট বিপণিবিতানের সামনে পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে। তবে পুলিশ সমাবেশে কোনো বাধা দেয়নি। সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।