মসজিদে বিস্ফোরণ
আরও লিকেজ খুঁজতে মাটি খুঁড়ছে তিতাস
সকাল ৮টার দিকে মসজিদের সামনের সড়কে তিতাসের শ্রমিকেরা শাবল, কোদাল, টুকরিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেন। মসজিদের পূর্ব ও উত্তর দিকে আরও দুটি পয়েন্টে তিতাসের পাইপ বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের পাইপলাইনে আরও লিকেজ খুঁজতে দ্বিতীয় দিনের মতো মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নিযুক্ত শ্রমিকেরা মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেন। নতুন করে পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের উত্তর দিকে ও পূর্ব দিকে আরও দুটি গর্ত খনন করে মাটি সরানোর কাজ করছেন শ্রমিকেরা।
এর আগে সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিতাসের অর্ধশতাধিক শ্রমিক চারটি পয়েন্টে আরসিসি রাস্তা কেটে মাটি খনন কাজ শুরু করেন। এ সময় তাঁরা মসজিদের বেসমেন্টের পাশে একটি পাইপলাইনে দুটি ছিদ্র দেখতে পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকাল ৮টার দিকে মসজিদের সামনের সড়কে তিতাসের শ্রমিকেরা শাবল, কোদাল, টুকরিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেন। মসজিদের পূর্ব ও উত্তর দিকে আরও দুটি পয়েন্টে তিতাসের পাইপ বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাসের পাইপলাইন খনন করার জন্য তিতাসের শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেছেন।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে চতুর্থ দিনের মতো পশ্চিম তল্লা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাদের লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায়, কেরোসিনের স্টোভে ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার তিতাসের পাইপলাইনে দুটি ছিদ্র পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি গ্যাস বের হচ্ছিল মসজিদের দান বাক্সের নিচ দিয়ে। এ কারণে ওই পয়েন্টে মাটি খননের কাজ করা হচ্ছে। সেখানে মাটি খনন করে পাইপলাইন কী অবস্থায় আছে, সেটি দেখা গেলে লিকেজের বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক মুসল্লি দগ্ধ হন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক শিশুসহ ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মসজিদের ৬টি এসি পুড়ে গেছে। থাই জানালার কাচ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট ও পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি ও সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঘটনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি সোমবার গণশুনানি করেছে। সেখানে ১৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এদিকে তিতাসের পাইপলাইনে দুটি ছিদ্র বের হওয়ায় সোমবার বিকেলে তিতাসের চার কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।