২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বেচে দেওয়া সন্তান ফিরে পেলেন মা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় বেচে দেওয়া নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ছেংগারচর পৌরসভা কার্যালয়ে
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় হাসপাতালের বিল দিতে ব্যর্থ হয়ে বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও স্থানীয় থানা–পুলিশের সহযোগিতায় মতলব উত্তরের ষাটনল এলাকার সিমলা আক্তার নামের এক নারীর কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান বলেন,‘সন্ধ্যার পর শিশু বিক্রির বিষয়টি জানার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি), মতলব উত্তর থানা–পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালাই। পরে উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের কাছে শিশুটি রয়েছে নিশ্চিত হলে, সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করি।’

ইউএনও আরও বলেন, এ সময় নবজাতক কেনা ও বেচার ঘটনায় জড়িত উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তারা পারস্পরিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ঘটনা ঘটিয়েছে। সিমলা আক্তার ছেলেটিকে আর দাবি করবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ শিশুর তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য তার মাকে নগদ পাঁচ হাজার টাকাও তুলে দিয়েছে। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাত ১০টার দিকে ছেংগারচর পৌরসভায় ছেলেটিকে তাঁর মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের হানিরপাড় গ্রামের দিনমজুর মো. আলমের স্ত্রী তামান্না বেগমের (২৮) প্রসবব্যথা উঠলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ছেংগারচর পালস এইড হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা। সেখানে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তামান্না। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি।

হাসপাতালে বিল আসে ২৬ হাজার টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তামান্না বেগম। এ অবস্থায় ছেংগারচর বাজারের কাউসার নামের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় ওই সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন তিনি। সন্তান বিক্রির পর ওই মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

পালস এইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফুল ইসলাম বলেন, ‘সিজারিয়ান অপারেশন আমাদের এই হাসপাতালে হয়েছে। কিন্তু বাচ্চা বিক্রির বিষয়টি সঠিক নয়। তামান্না বেগমের সঙ্গে স্বামী মো. আলমের যোগাযোগ নেই। এ কারণেই বাচ্চা বিক্রির নাটক সাজান তামান্না বেগম।’