বাঁচানো গেল না গুলিবিদ্ধ সেই হাতিকে

গুলিতে আহত বন্য হাতিটি মারা গেছে
সংগৃহীত

শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না কক্সবাজারের রামুর জোয়ারিয়ানালা জুমছড়ি বনাঞ্চলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত বন্য হাতিটি। মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটির দেহ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। ময়নাতদন্তে হাতিটির পা ও দেহের বিভিন্ন স্থানে আটটি গুলির জখম পাওয়া গেছে। এ নিয়ে কয়েক দিনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মারা গেল তিনটি হাতি।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবি, বনাঞ্চলের আশপাশের খেতের ফসল ও ধান রক্ষার জন্য কিছু ব্যক্তি গুলি করে বন্য হাতিগুলো হত্যা করছেন। খেতে যেন বন্য হাতি নামতে না পারে, সে জন্য অনেকে আশপাশের এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে সংযোগ টেনে রাখেন। তারে আটকা পড়েও হাতির মৃত্যু হচ্ছে।

বন বিভাগের কর্মচারীরা বলছেন, ১৫ নভেম্বর সকালে জোয়ারিয়ানালার বনাঞ্চলে গুলিবিদ্ধ হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় কাঠুরিয়ারা। এরপর থেকে হাতিটিকে বাঁচাতে চিকিৎসাসেবা দেন ভেটেরিনারি সার্জনেরা।

চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রথম দিন হাতির অস্ত্রোপচার করা হয়। হাতির সামনের বাঁ পায়ে ভারী অস্ত্রের একটি গুলি লাগে। আর পেটে সাতটি ছররা গুলি বিদ্ধ হয়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা হাতিটিকে স্যালাইন ও ইনজেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। সম্ভবত ২০-২৫ দিন আগে হাতিটিকে গুলি করেছিল দুর্বৃত্তরা।

রামু উপজেলা প্রাণী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহজাদা মোহাম্মদ জুলকারনাইন বলেন, হাতিটির পায়ে ও দেহের বিভিন্ন স্থানে ৮টি গুলির জখম রয়েছে। এর মধ্যে সামনের পা কেটে দুটি গুলি বের করা হয়েছে।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের জোয়ারিয়ানালা বন রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, বন্য হাতিকে কারা গুলি করেছে, এখনো শনাক্ত করা যায়নি। জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

১৫ নভেম্বর রামু দক্ষিণ মিঠাছড়ির খরলিয়া ছড়ার শাইরার ঘোনা এলাকায় গুলি ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মেরে ফেলা হয় অপর একটি বন্য হাতি। পরে ময়নাতদন্তের পর হাতিটি পুঁতে ফেলা হয়।

পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ বলছে, কক্সবাজারের বনাঞ্চলে ১০ দিনের ব্যবধানে তিনটি বিপন্ন এশিয়ান হাতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটা উদ্বেগজনক। যে কোনো মূল্যে এটা বন্ধ করতে হবে।