বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে নদীতে ডুব, ১৭ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পাশের নদে গোসল করতে গিয়ে বাজি ধরে শাকিব হাওলাদার (১২)। সেখানকার সবার বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। নদীর তলদেশ থেকে মাটি তুলে আনতে পারলে শাকিব বন্ধুদের কাছ থেকে ১০ টাকা পাবে। তবে পানিতে ডুব দেওয়ার পরই নিখোঁজ হয় শাকিব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়নের কিসমত রামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজের প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর আজ শনিবার সকাল সাতটার দিকে নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করেন এলাকার লোকজন।
শাকিব মাধবখালী ইউনিয়নের কিসমত রামপুর গ্রামের মো. হানিফ হাওলাদারের ছেলে। আজ বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে শাকিবের লাশ দাফনের কথা রয়েছে।
গতকাল রাতে শাকিবের বাবা হানিফ হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা দুইটার দিকে একই এলাকার নাঈম, রাব্বি, ইমনসহ কয়েকজন বন্ধু নিয়ে শাকিব স্থানীয় শ্রীমন্ত নদে গোসল করতে যায়। গোসলের একপর্যায়ে শাকিব নদীর পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হয়। শাকিবের সঙ্গে থাকা অন্য বন্ধুরা প্রথমে ভয়ে কাউকে কিছু না বলে যার যার বাড়িতে চলে যায়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শাকিব বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে শাকিবের বন্ধুরা জানায়, সে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। রাতভর অনেক খোঁজাখুজি করেও শাকিবকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে আজ সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে শাকিবের লাশ ভেসে ওঠে।
শাকিবের সঙ্গে গোসল করতে যাওয়া নাঈম (১১) প্রথম আলোকে বলে, ‘রাব্বি, ইমন, শাওন, রবিউল ও শাকিবসহ আমরা সাত থেকে আটজন বন্ধু মিলে নদীতে গোসল করছিলাম। আমাদের মধ্যে শাকিবই সবচেয়ে বড়। সে ভালো সাঁতার জানত। নদীর নিচ থেকে মাটি তোলার জন্য আমাদের সঙ্গে সে ১০ টাকা বাজি ধরে। পরে পানিতে ডুব দিয়ে আর ওঠেনি। প্রথমে ধারণা করেছিলাম, আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সে ডুব দিয়ে হয়তো পাড়ে উঠে গেছে। পরে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু শাকিবকে না পেয়ে কাউকে কিছু না বলেই বাড়িতে চলে আসি।’
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, শাকিবের পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। তাই ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।