প্রেমে প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ

প্রেমে প্রতারণা ঠেকাতে আইন প্রণয়নের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

প্রেমে প্রতারণার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সমাবেশ করেন তাঁরা। একই দাবিতে আগামী রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেবেন বলেও জানিয়েছেন কর্মসূটি পালনকারী শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর পেছনে প্রেমের সম্পর্কে প্রতারণা প্রধান কারণ হিসেবে সামনে আসছে। এ ছাড়া সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন শিক্ষার্থীরা।

বক্তারা আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আন্তরিক। বর্তমান সময়ে মহামারির মতো প্রেমে প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসছে। এ ক্ষেত্রে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর ব্যাপারে এমন অভিযোগ উঠলে বিষয়টি অবশ্যই প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা আগামী রোববার এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলব এবং আমাদের দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেব।’

সমাবেশে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. হাবিবুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোত্তালেব হোসেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এম এ বাকি বিল্লাহ প্রমুখ।

সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোত্তালেব হোসেন বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট পরিণত। তাঁরা যখন প্রেম করেন, তখন বিভিন্ন প্রত্যাশা ও বিয়ে করার আশা নিয়েই সম্পর্কে জড়ান। পরে যখন দেখেন ছেলে ভালো চাকরি করতে পারেন না কিংবা মেয়ের সঙ্গে বনিবনা হয় না, তখন পরিবারের কথা বলে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে যান। এমনকি আত্মহত্যার পথও বেছে নেন। ইতিমধ্যে আমরা সামাজিক যোাগাযোগমাধ্যমে এমন খবর বহু পেয়েছি। আমাদের ক্যাম্পাসেও এমন ঘটনা ঘটেছে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমাদের শিক্ষকেরা কাজ করছেন। এ ব্যাপারে উপাচার্য স্যারও যথেষ্ট আন্তরিক। তবে আজ মিছিল ও সমাবেশ করা শিক্ষার্থীরা আসলে কী ধরনের সহযোগিতা চান, তা তাঁদের স্মারকলিপি হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে।’

২০১৩ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে একই বিভাগের এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার জের ধরে ওই ছাত্রীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন বরিশালের জেলা জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আনোয়ারুল হক।