প্রবাসী স্বামীর লাশ বাড়িতে আসার ৫ মিনিটেই স্ত্রীর মৃত্যু, ছেলে হাসপাতালে

মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

মৃত্যুর প্রায় এক সপ্তাহ পর প্রবাসী স্বামীর লাশ বাড়িতে আসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মায়ের মৃত্যু দেখে বড় ছেলেও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে হাসপাতালে রেখেই স্বজনেরা বাবার লাশের দাফনের ব্যবস্থা করেন। একটু সুস্থ হলে ছেলেকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এনে মাকে কবর দেওয়া হয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদ নগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। ২২ জুন প্রবাসী জামাল উদ্দিন (৪৭) মালদ্বীপে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নানা চেষ্টা-তদবিরের পর গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টায় তাঁর লাশ ফেনীর ফরহাদনগর ইউনিয়নের চর কালিদাস গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।

ফরহাদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন বলেন, প্রবাস থেকে জামাল উদ্দিনের লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর পর পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হয়। স্বামীর লাশ দেখে নির্বাক হয়ে যান স্ত্রী খোদেজা বেগম। পাঁচ মিনিট পরই স্ত্রী খোদেজাও (৩৮) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্ত্রীর লাশ ঘরে রেখে ও বড় ছেলে আজাহারকে হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে জামালের লাশ দাফন করা হয়।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় একই কবরস্থানে স্বামীর কবরের পাশে স্ত্রী খোদেজা বেগমকেও কবর দেওয়া হয়। এ সময় স্বজনদের সঙ্গে দুই ছেলেও মায়ের জানাজায় অংশ নেন।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের কয়েক বছর পর পরিবারের সচ্ছলতার আশায় ১৪ বছর আগে মালদ্বীপে পাড়ি জমান জামাল উদ্দিন। এরই মধ্যে তিন-চারবার ছুটিতে বাড়িতে এসে ঘুরে যান। তাঁর স্ত্রী খোদেজা বেগম বড় ছেলে আজাহার (১৮) ও ছোট ছেলে হৃদয়কে (১৪) নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন। আজহার এবার ফেনী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার্থী ও পাশাপাশি ফেনী ক্রিকেট একাডেমির ছাত্র। ছোট ছেলে হৃদয় স্থানীয় স্কুলে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, প্রবাসী জামাল খুব ভালো মানুষ ছিলেন। এলাকায় সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতেন। তাঁদের দুই ছেলে এখন এতিম হয়ে গেলেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।