প্রথম দিনে এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ে ধীরগতি, যানবাহনের দীর্ঘ জট
ঢাকা ও ফরিদপুরের ভাঙ্গার মধ্যে ৫৫ কিলোমিটার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে শুরুর প্রথম দিনে টোল আদায়ে ধীরগতি দেখা গেছে। টোল প্লাজার সবগুলো বুথ চালু না হওয়ায় ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যানবাহনের দীর্ঘ জট তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহন চালক ও যাত্রীরা।
এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে পরিচিত এই মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো থেকে গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টায় (১ জুলাই) টোল আদায় শুরু হয়। ফরিদপুর প্রান্তে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় আজ শুক্রবার সকালে দুই কিলোমিটারের মতো এলাকাজুড়ে যানবাহনের সারি তৈরি হয়। টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে বগাইল টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষা করতে হয়।
বগাইল টোল প্লাজায় অপেক্ষারত ঢাকার সায়েদাবাদগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক মো. জাকির হোসেন (৫২) বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর গত দুই-তিন দিন এক ঘণ্টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছেছি। আজকে থেকে এখানে আবার টোল চালু হওয়ার কারণে এখানে জ্যামে আটকে আছি দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। এখনো সামনে একশর বেশি গাড়ি আছে।’
বগাইল টোল প্লাজার উপব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ১০টি বুথের মধ্যে ৪টি সচল রয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশি থাকায় অল্পসংখ্যক টোল আদায় বুথ দিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন দ্রুত বাকি ছয়টি বুথ চালু করার। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা–ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেওয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক। পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিয়া এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে একটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলর ট্রাকের (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল ধরা হয় ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪৪০ টাকা এবং মাঝারি আকারের ট্রাকের ক্ষেত্রে ২২০ টাকা দিতে হবে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ভোলাগামী পণ্যবাহী বড় ট্রাকের চালক মো. রমজান মিয়া (২৭) বলেন, ‘১০টা টোল বুথের মাত্র ৪টা চালু হয়েছে। এজন্য টোল আদায়ে জ্যাম লেগে গেছে। এই জ্যাম আস্তে আস্তে বাড়বে ছাড়া কমবে না। কারণ যতই বেলা বাড়বে ততই গাড়ির চাপ বাড়বে।’
নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে ফরিদপুরের আলিপুর থেকে ঢাকার গুলশানে যাচ্ছিলেন নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘যানজটের কারণে অনেক সমস্যায় পড়েছি। টোল আদায় করতে খুব দেরি করছে।’
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামিদ উদ্দিন আহমেদ আজ শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, সকালের দিকে যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছিল। পরে আরও একটি বুথ চালু করায় আস্তে আস্তে জট কমছে। তবে এখনো এক কিলোমিটারের মতো যানবাহনের সারি রয়েছে।