পলাতক আসামিদের সঙ্গে কেক কেটে জন্মদিন পালন করা ওসিকে প্রত্যাহার
পলাতক আসামিদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করা কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণিকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।
পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়েছে, ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি ২ মার্চ জন্মদিন উপলক্ষে অফিস কক্ষে (চকরিয়া থানায়) কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তখন তাঁর পাশে চকরিয়া থানার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি আরহাব মাহমুদ ওরফে রুবেলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন ১৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিতসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় জনসম্মুখে কক্সবাজার জেলা পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই অফিসার ইনচার্জ চকরিয়া থানার দায়িত্ব থেকে তাঁকে (ওসিকে) প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হলো।
গতকাল বুধবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘পলাতক আসামিদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ওসি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
জানতে চাইলে ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি হবে ভাবতেও পারিনি। ভুল হয়ে গেছে। এখন পুলিশ লাইনসে চলে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে সুন্দরভাবে কাজ করব। সে জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
ওসি ওসমান গণির জন্মদিন ছিল ২ মার্চ। ওই দিন তিনি নিজ কার্যালয়ে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তবে হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামিদের সঙ্গে কেক কেটে জন্মদিন পালনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। থানার মধ্যে পলাতক আসামিদের সঙ্গে ওসির জন্মদিন পালন, আসামিদের কেক খাইয়ে দেওয়া ও আসামিদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়।
আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে অস্ত্রধারী একদল তরুণ চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন এবং তাঁর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই তানজীমুল ইসলাম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ ওরফে রুবেলকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। কয়েক মাস আগে আদালতে ওই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি আরহান মাহমুদ ওরফে রুবেলসহ অন্যরা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পলাতক আসামিদের নিয়ে স্বয়ং ওসি থানায় কেক কেটে জন্মদিন পালন করার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর মামলার বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।