নেশার টাকার জন্য মাকে হত্যা, আদালতে ছেলের স্বীকারোক্তি

হত্যা
প্রতীকী ছবি

যমুনা রানী সরকারের (৫৫) স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই ছেলে পৃথক হন। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন। মাদকাসক্ত এক ছেলে তাঁকে টাকার জন্য প্রায়ই মারপিট করতেন। শেষ পর্যন্ত টাকা না পেয়ে মাকে হত্যার পর বাড়ির পাশের বাগানে ফেলে রাখেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

পাবনার চাটমোহর উপজেলা সদরের দোলং মহল্লায় ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সকালে। বাগানের একটি গাছের সঙ্গে হেলান দেওয়া অবস্থায় ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতেই নিহতের মেয়ে সরস্বতী রানী কুন্ডু বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ তাঁর দুই ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ছোট ছেলে স্বপন কুমার সরকার (২৭) মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। বিকেলে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই নারী অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাতে কাজ শেষে পাশের বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়েছিলেন। রাত ১০টার দিকে টিভি দেখে বের হওয়ার পর তাঁর আর কোনো খোঁজ ছিল না। সকালে পরিবারের লোকজন বাড়ির পাশে বাগানে গেলে তাঁর লাশ দেখতে পান। লাশটি বাগানের একটি গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা ছিল। পরে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনার রাতেই ওই নারীর মেয়ে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে সন্দেহজনকভাবে তাঁর দুই ছেলে স্বপন কুমার সরকার ও রতন কুমার সরকারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ছোট ছেলে স্বপন কুমার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, স্বপন মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য তিনি প্রায়ই মাকে মারপিট করতেন। ঘটনার দিনও তিনি মায়ের কাছে মাদক সেবনের জন্য টাকা চান। কিন্তু মা টাকা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন। রাতে মা বাড়ি ফিরলে তিনি নিজ ঘরেই মাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরে বাগানে নিয়ে মায়ের লাশ গাছে ঝোলানোর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে গাছের নিচে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।

ওসি আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বপন কুমার দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের মামলাও রয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বড় ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।