দুই কেন্দ্রে সংঘর্ষ, গুলি, ভোট স্থগিত
চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। লাঠিসোঁটা নিয়ে কয়েক শ উত্তেজিত নারী-পুরুষ ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। তারা ইভিএম মেশিন, কেন্দ্রের দরজা-জানালা ও নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
আজ বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হলে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথরঘাটা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেখানে তিনজন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থনে পুলক খাস্তগির এবং বিএনপির সমর্থনে মো. ইসমাইল কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বেলা ১১টার দিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা কয়েকটি বুথ দখল করে জাল ভোট দিচ্ছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এর পরপরই ৫০০ থেকে ৬০০ উত্তেজিত নারী-পুরুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। তারা ভোটকেন্দ্রের সামনে রাখা পুলিশ ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত তিনটি মিনিবাস ভাঙচুর করে। কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে পাঁচটি ইভিএম মেশিন এবং কক্ষের দরজা ও জানালার কাচ ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। একপর্যায়ে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী পুলক খাস্তগির দাবি করেছেন, বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকেরাই এই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী মো. ইসমাইলকে আটক করেছে। পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)নেজামউদ্দিন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এই বিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষের দুটি ভোটকেন্দ্র ছিল, দুটিই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থীদের সমর্থদের পারস্পরিক সংঘর্ষ ও কেন্দ্রে হামলার কারণে কেন্দ্র দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নারীদের ভোটদান কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের বাইরে একটু উত্তেজনা চলছিল। বেলা প্রায় ১১টার দিকে হঠাৎ ৫০০ থেকে লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। তারা কেন্দ্রের ভেতরে এসে ভাঙচুর চালাতে থাকে। মোট পাঁচটি ইভিএম মেশিন ভেঙে ফেলেছে। এই হামলাকারীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই ছিল বেশি।
পাথরঘাটা এলাকায় পরিস্থিতি এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সেখানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
পাথরঘাটা ছাড়াও ১৪ নম্বর লালখান বাজার এলাকাতেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এখানে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। আর পাহাড়তলীতে গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।