চার বছর ধরে উত্ত্যক্ত, এবার ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়ে বিষপান
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিষপানের তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া লিপি খাতুন। স্থানীয় এক ব্যক্তির ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
লিপি খাতুন উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের কৈগাঁতী গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে। এ বছর জালশুকা হাবিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান তিনি। গত মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়িতে বিষপান করেন তিনি।
এ ঘটনায় তাঁর বাবা ফজলুল হক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে একই এলাকার রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের বাবুল মিয়াসহ (৪০) ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিপি খাতুনকে প্রায় চার বছর ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন বাবুল মিয়া। এ বিষয়ে গ্রামের মাতবরদের কাছে বিচার চেয়েছিলেন ফজলুল হক। কিন্তু মাতবররা এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেননি। এদিকে বিচার চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন বাবুল মিয়া। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পরিবারের লোকজনের কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে বাবুল ও তাঁর সহযোগী একই এলাকার রফিকুল ইসলাম লিপির ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লিপিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বাবুল মিয়া।
লিপির চিৎকার শুনে অন্য লোকজন ছুটে এলে বাবুল ও রফিকুল সটকে পড়েন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হলে ঘণ্টাখানেক পর লিপি বিষপান করেন। স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থায় অবনতি হলে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
লিপির বাবা ফজলুল হক বলেন, ‘আমার মেয়েকে আমি বাবুলের হাত থেকে বাঁচাইতে পারলাম না। আর কারও মেয়েকে যেন এভাবে জীবন দিতে না হয়। আমি বাবুলসহ ঘটনায় জড়িত সবার বিচার চাই।’
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, লিপি খাতুন নামের ওই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।