কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলায় দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল রোববার রাতে কুমিল্লা আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কান্তি নাথ ১৬৪ ধারায় তাঁদের জবানবন্দি নেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির উপপরিদর্শক মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, জবানবন্দিতে ২ নম্বর আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল বলেছেন, ঘটনার দিন তিনি পিস্তল হাতে গুলি করেছেন। এ ছাড়া ১০ নম্বর আসামি সায়মন বলেছেন, দিঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে কি না, তা রেকি করেন তিনি।
এদিকে হত্যা মামলার চার আসামি আশিকুর রহমান ওরফে রকি, আলম, জিসান মিয়া ও মাসুমকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সোমবার দুপুরে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আদালত, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর বিকেলে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়ায় থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজ নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এ পর্যন্ত হত্যা মামলাটির এজাহারভুক্ত ১১ আসামির মধ্যে ৩ জন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১ জন পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া ৭ আসামির মধ্যে ৬ জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ২ নম্বর আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল ও ১০ নম্বর আসামি সায়মনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার বিকেলে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত বিচারক দুজনের জবানবন্দি নেন।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, ২২ নভেম্বর বিকেলে জেল সোহেল কাউন্সিলর মো. সোহেলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে প্রথমে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। এরপর কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। তিনি অস্ত্রের জোগানদাতাদের নামও আদালতকে জানান। অপর আসামি সায়মন দিঘিরপাড়ের সড়কে দাঁড়িয়ে থেকে পুলিশ আসে কি না, তা রেকি করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত দুই আসামির রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়। এ ছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আরও দুজন—মোহাম্মদ রাব্বী ইসলাম ও ইমরান খন্দকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এখন চার আসামি আশিকুর রহমান, আলম, জিসান মিয়া ও মাসুমকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলবে।